
নিজস্ব প্রতিনিধি ॥
চাঁদপুরে মোবারক হোসেন (৬০) নামের এক ব্যক্তিকে হত্যার দায়ে পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রোববার (৮ অক্টোবর) বিকেলে চাঁদপুর সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. মহসিনুল হক এই রায় দেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও পাবলিক প্রসিকিউটির (পিপি) রনজিত রায় চৌধুরী বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন।
কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামের মন্তিখার ছেলে মোস্তফা (২৫) ও মিলন হোসেন (২৩), আব্দুর রহিমের স্ত্রী বিলকিস বেগম (৪০) ও তাদের দুই ছেলে রিপন হোসেন (২৪) ও সাদ্দাম হোসেন (২৭)। হত্যার শিকার মোবারক হোসেন একই বাড়ির মৃত ফজল হকের ছেলে।
মামলার বিবরণ সূত্রে জানা গেছে, বিলকিস বেগম তার ঘরে লোকজন এনে অনৈতিক কাজে লিপ্ত হতেন। এসব বিষয় থেকে বাড়ির লোকজন ও স্বজনরা তাকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করতেন। কিন্তু তিনি কারও নিষেধ মানতেন না। ২০১৩ সালের ৮ মার্চ সন্ধ্যায় বিলকিস বেগমকে অনৈতিক কাজের জন্য নিষেধ করেন মোবারক হোসেন। এই ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে আসামিরা মোবারক হোসেন ও তার স্ত্রী নিলুফা বেগমকে বেদম মারধর এবং দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে। পরে বাড়ির লোকজন ও আত্মীয় স্বজন তাদেরকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরবর্তীতে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। এর মধ্যে মোবারক হোসেনের অবস্থার অবনতি হলে তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই বছরের ৩ এপ্রিল তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় ৪ এপ্রিল মোবারক হোসেনের ছেলে মো. জিল্লুর রহমান বাদী হয়ে উল্লিখিত আসামিদের বিরুদ্ধে ফরিদগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত শেষে ওই বছরের ৩০ নভেম্বর পুলিশ আদালতে চার্জশিট দাখিল করে।
পাবলিক প্রসিকিউটির (পিপি) রনজিত রায় চৌধুরী বলেন, মামলাটি ১০ বছরের অধিক সময় চলাকালীন আদালত সাক্ষ্যগ্রহণ ও মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা এবং আসামিরা তাদের অপরাধ স্বীকার করায় বিচারক আজ এই রায় দেন। রায়ের সময় আসামি বিলকিস, সাদ্দাম ও মোস্তফা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকি দুইজন পলাতক রয়েছে।