
মাসুদ রানা ॥
তারুন্য সাংস্কৃতিক সংগঠনের পরিচিতি, সংবর্ধণা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।গতকাল ২৫ নভেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যা ৭ টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে, তারুণ্য সাংস্কৃতিক সংগঠনের আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন পৌর মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল।
তিনি বলেন, সাংস্কৃতির যে কত শক্তি, অসীম সেটাকে ফেলে দেওয়ার মত কোন সুযোগ নেই, একটি সমাজকে বদলে দেওয়ার জন্য, কুসংস্কার কে কাটানোর জন্য, আলোর উদগীরণ ঘটানোর জন্য, যে কাজ অসম্ভব বলে মনে হয়, সে কাজকে সম্ভব করার জন্য একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন অনেক ক্ষেত্রে মূল ভুমিকা রাখে।
তিনি আরও বলেন, সাংস্কৃতিক কর্মীদের যে কি শক্তি সেটা যারা উপলব্ধি করতে পেরেছেন তারাই জাতীয়তাবাদী নেতা হতে পেরেছে, তারা আন্দোলন করতে পেরেছে তারাই রাষ্ট্র দিয়েছেন তারাই স্বাধীন করেছেন। সাংস্কৃতির সাথে থাকাটা রাজনৈতিক দায়িত্ব বলে আমি মনে করি।
এই স্বাধীন বাংলায় আমার একটা আক্ষেপ যে মাঝে মাঝেই আমি আমার বাবাকে বলি আপনি মুক্তিযুদ্ধ করলেন না এটা আমার আপসোস থাকে। আমি তাদের কে সৌভাগ্যবান মনে করি যারা আজ বলতে পারে “আমি বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান”। এইযে একটা পরিচয় সেটা আমি দিতে পারিনা। আমাদের জীবদ্দশায় নয় হাজারবার জন্ম নিলেও এই পরিচয় দেয়ার সুযোগ আর হবেনা। এই বাংলার মাটিতে অনেক রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মেয়র হবেন কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা আর কেউ হতে পারবনা।
তারুন্য সাংস্কৃতিক সংগঠনের সভাপতি ফেরদাউস মোর্শেদ জুয়েলের সভাপতিত্বে আর জে বিল্ডার্সের সহযোগিতায়, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মোঃ আতাউর রহমান পাটোয়ারী পরিচালনায় বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন, সংবর্ধিত অতিথি যোদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ ওয়াদুদ।
তিনি বলেন, ৭১ এ মুক্তি যুদ্ধ করেছে তরুনরা, নেতৃত্ব দিয়েছে তরুনরা, আজকে যারা ব্রিজের উপরে আড্ডা দিচ্ছে, যারা অহেতুক সময় কাটাচ্ছে তারা যদি আজ এখানে উপস্থিত থাকতেন তাহলে হয়তো অনেক গুনীজনদের জীবন কাহিনি শুনতে পারতেন। আগামী কিছুদিন পরেই বিজয় মেলা শুরু হবে, আমি সকল তরুণ প্রজন্মকে উপস্থিত থেকে দেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানার জন্য আহবান জানাবো।
আরও বক্তব্য রাখেন, চাঁদপুর প্রেসক্লাব সভাপতি মোঃ গিয়াসউদ্দিন মিলন, প্যানেল মেয়র এডভোকেট মোঃ হেলাল হোসাইন, প্রাক্তন চেয়ারম্যান মোঃ জিতু বেপারী, প্রেসক্লাবের প্রাক্তন সভাপতি শহীদ পাটোয়ারী, চাঁদপুর সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি তপন সরকার, ফারুক হোসেন ভুইয়া।
অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম এডভোকেট মুকবুল আহমেদকে মরণোত্তর সংবর্ধণা প্রদান করেন। সন্মাননা ক্রেস্ট গ্রহণ করেন পুত্রবধু। আরও সংবর্ধিত অতিথি ছিলেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব এম এ ওয়াদুদ, চাঁদপুর সংগীত নিকেতনের সাধারণ সম্পাদক শ্রী জীবন কানাই চক্রবর্তী।
অনুষ্ঠানে আরও শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মহসীন পাঠান, ফরিদগঞ্জ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান তসলিম বেপারী। শেষে অতিথিদের ক্রেস্ট প্রদান করেন এবং নৃত্য ও কন্ঠঃ শিল্পীদের পরিবেশনায় এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক এবং নৃত্যা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।