সিএনজি চোর চক্রের ৮ সদস্য আটক

নিজস্ব প্রতিনিধি ॥

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ থেকে সিএনজি চালিত অটোরিকশা চুরির ঘটনায় দায়ের করা মামলার সূত্র ধরে কুমিল্লা থেকে একজন এবং সিলেট থেকে ৭জন চোর চক্রের সদস্যকে আটক করছে পুলিশ। এ সময় চুরি হওয়া ৩টি সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও চুরির কাজে ব্যবহৃত একটি প্রাইভেটকার আটক করা হয়। বুধবার দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ের করেন পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ ।

আটককৃতরা হলেন,সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার হায়নারপুর এলাকার মৃত নঈম উল্যাহর ছেলে আনহার আলী(৩৫),একই জেলার মোঘলা বাজার উপজেলার কাদিরপুর এলাকার মোঃ শফিকুর রহমানের ছেলে বিল্লাল আহম্মদ ওরফে কালা বিল্লাল (৩৪), বিশ্বনাথ উপজেলার হরিকলস এলাকার  সোনাপর আলীর ছেলে বিল্লাল হোসেন(২৪), জৈন্তাপুর উপজেলার ডোডিক এলাকার আব্দুল সালামের ছেলে মোঃ শিমুল আহম্মদ(২৪), গোলাপগঞ্জ উপজেলার হাজিপুর সাতগরি এলাকার মৃত তোয়াজ উল্লাহর ছেলে আবুল বাছিত(৪০), গায়াইঘাট উপজেলার নয়াখোলা এলাকার মৃত শফিকুর রহমানের ছেলে মোঃ আলমগীর আহম্মদ(২৬) এবং হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বড়বউলা এলাকার মৃত আলা উদ্দিন খাঁনের মোঃ নজরুল খাঁন(২৬) ও একই জেলার বাহুবল উপজেলার তিতারকোনা এলাকার মো: আব্দুল মালেকের ছেলে মোঃ সোহান মিয়া(২৪)।

পুলিশ জানায়, গত ২৬ মে রাতে হাজীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ রায়চোঁ এলাকার জব্বর আলী মুন্সি বাড়ী থেকে মো. শরীফ হোসেন (২৭) নামে ব্যাক্তির অন টেস্ট সিএনজি চালিত অটোরিকশা চুরি হয়। শরীফ জানতে পারে একই রাতে আরো দুটি অটোরিকশা চুরি হয়েছে। এই ঘটনায় শরীফ বাদী হয়ে ২৮ মে হাজীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করে।
মামলাটি থানায় রুজু হওয়ার পর চোরাই সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও চোর চক্রকে গ্রেফতার করার জন্য পুলিশ সুপার এর নির্দেশে হাজীগঞ্জ থানার ওসির নেতৃত্বে একটি চৌকস দল গঠন করা হয়। তারা তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রথমে চোর চক্রের সদস্য আনহার আলীকে ২৮ মে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট চৌরাস্তা এলাকা থেকে অন টেস্ট সিএনজি (অটোরিকশা)সহ আটক করে।

হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ জোবাইর সৈয়দ জানান, আটক আনহার আলী আটকের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদে চোর চক্রের অবস্থান ও চুরির ঘটনার সকল পরিকল্পনা পুলিশ জানাতে পারে। ৩০ মে আটক সিএনজি হাজীগঞ্জ থানায় রেখে আনহার আলীকে সাথে নিয়ে সিলেট মেট্টোপলিটন মোঘরাবাজার থানায় যান। ওই থানা পুলিশের সহযোগিতায় হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে বাকী ৭ আসামীকে আটক করা হয়।

প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ জানান,চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ থানায় এক ব্যক্তির সিএনজি চুরি হওয়ার অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগের বৃত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে প্রথমে আনহার আলীকে কুমিল্লা থেকে আটক করা হয়। আটককৃত আনহার আলীর তথ্যের ভিত্তিতে পরে সিলেট জেলায় সিলেট মেট্রো পলিটন পুলিশসহ পুলিশের একটি টিম সিলেট জেলার বিভিন্ন থানায় অভিযান পরিচালনা করে ৩টি সিএনজিসহ আরো ৭জনকে আটক করতে সক্ষম হয়। আটককৃতদের মধ্যে একজন টিম লিডার আছে। তার নাম মোঃ নজরুল খাঁন। তার বিরুদ্ধের দেশের বিভিন্ন থানায় সিএনজি চুরির ১০টি মামলা রয়েছে। আটককরা দেশের বিভিন্ন জেলার সিএনজি চুরি করে থাকে। চুরিকৃত সিএনজি সিলেটের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যায়। পরে চোরাইকৃত সিএনজি সিলেট অঞ্চলে নিয়ে নাম্বার পরিবর্তন অথবা অন টেষ্ট লেখার কাগজ তৈরী করে বিক্রয় করে থাকে। তাদের চুরি করার পদ্ধতি হলো তারা বিভিন্ন জেলায় টার্গেট করে প্রথমে দুইজন আসে। পরে রেকি করে তাদের একটা টিম ওই জেলায় ড্রাইভারসহ নিয়ে আসে। তারপর তারা সিএনজিতে উঠে চুরি করে থাকে। এছাড়া এই চক্রের আরো দুই সদস্য সজলু মিয়া ও উষার আলী পলাতক রয়েছে। তাদেরকে আটকের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

সাংবাদিক এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, চাঁদপুরের তাদের প্রথম টার্গেট ছিল চাঁদপুর সদরে চুরি করার জন্য। কিন্ত এখানে চুরি করতে না পেরে হাজীগঞ্জ থানায় চুরি করে থাকে। কোথায় থেকে চুরি করা যায় সে জন্য তারা হাজীগঞ্জে বেশ কয়েকদিন চুরি জন্য অবস্থান করে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পংকজ কুমার দে, চাঁদপুর প্রেসক্লাব সভাপতি এএইচএম আহসান উল্লাহ, সাবেক সভাপতি গিয়াসউদ্দিন মিলন , হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ জোবাইর সৈয়দ প্রমুখ।

Loading

শেয়ার করুন: