আইন না মানলে জেল-জরিমানাসহ জেলে নৌকা নিলাম করে দেয়া হবে : জেলা প্রশাসক

আনোয়ারুল হক॥

চাঁদপুরে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০২১ (৪-২৫ অক্টোবর) সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জেলা টাস্কফোর্স কমিটির প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৯ সেপ্টেম্বর বুধবার সকাল ১১ টায় জেলা প্রশাসন ও মৎস্য অধিদপ্তর চাঁদপুরের যৌথ আয়োজনে জেলা প্রশাসকের সভা কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপ্রধানের বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ।

সভাপ্রধানের বক্তব্যে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, বাইশ দিনের অভিযান চলাকালে জেলেরা ২০ কেজি চালের ২০কেজি পায় তা নিশ্চিত করা হবে। রাতের সময় যাতে জেলেরা নদীতে নামতে না পারে টহল ব্যবস্থা জোরদার করা হবে।জেলেরা যদি মাছ মারা বন্ধ না রাখে, মা ইলিশ রক্ষা সম্ভব না। এ বিষয়ে জেলেদের সচেতন থাকতে হবে কারণ মা ইলিশ নিরাপদে ডিম ছাড়ার সুযোগ জেলেদেরই করে দিতে হবে। এতে জেলেরাই ইলিশ পেয়ে লাভবান হবে।

জেলা প্রশাসক বলেন, অভাশ্রমের সময় প্রশাসনকে সঠিক তথ্য দিতে হবে। যাতে করে ম্যাজিস্ট্রেট গিয়ে সত্যতা পায়। মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান সুষ্ঠ ভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জেলেদের যে চাল আসছে, তা সঠিক সময়ে, সঠিক নিয়মে তাদের মাঝে বিতরন করতে হবে। প্রতিজন জেলেকে ২০ কেজি করে চাল দিতে হবে,একটা চাল ও তাদেরকে কম দেওয়া যাবেনা, জেলেদের তালিকার পরিপূর্ণ চাল আসছে, যানবাহনের খরচ ও দেওয়া হয়েছে। যারা চাল কম দিবেন, এধরনের সংবাদ আসলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রতিটি জেলে পল্লীতে যেতে হবে,তাদেরকে বুঝাতে হবে, জেলেদেরকে যুব উন্নয়ন থেকে প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা হবে। যাতে জেলেরা অভাশ্রমের সময় বিভিন্ন কাজ করতে পারে। এবার নদীতে মাছ না পাবার অনেকগুলো কারণ রয়েছে। জাটকা ও মা ইলিশ ব্যাপকভাবে নিধন করায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এবার এমনটা যেন না হয়। সবার সমন্বিত প্রচেষ্টায় আমরা মা ইলিশ রক্ষা অভিযান সফল করার কাজ করব। যারা আইন মানবে না। জেল-জরিমানাসহ জেলে নৌকা নিলাম করে দেয়া হবে।

তিনি বলেন,জেলেদের তালিকা সঠিক ভাবে করতে হবে, সকলে মিলে সমন্বয় করে সঠিক তথ্য দিয়ে জেলে তালিকা করতে হবে, যারা যারা মারা গেছে,যারা বিদেশ গেছে, যারা পেশা পরিবর্তন করছে তাদেরকে চিহৃত করে সঠিক ভাবে তালিকা বের করতে হবে। এ বারের অভিযান যাতে সঠিক ভাবে বাস্তবায়ন হয় সেদিকে আমাদের লক্ষ্যে রেখে কাজ করতে হবে।মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানের সময় বহিরাগত জেলেরা মাছ স্বীকার করতে আসলে, সাথে সাথে প্রশাসনকে অবগত করতে হবে। তাদেরকে চিহৃত করতে হবে। অভিযানের সময় স্ব স্ব ডিপার্টমেন্ট তাদের দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করতে হবে। মৎস্য পল্লী, জেলে পল্লীতে বেশি বেশি প্রচার করতে হবে।মা ইলিশ রক্ষা করতে হবে, নতুবা আমরা ইলিশ পাবোনা, ইলিশ আমাদের একটা জাতিয় সম্পদ, সমন্বয় করে ইলিশ রক্ষা করতে হবে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ গোলাম মেহেদীর সঞ্চলনায় বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর অঞ্চলের নৌ-পুলিশ সুপার মুহাম্মদ কামরুজ্জামান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক ইমতিয়াজ হোসেন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নাসির উদ্দিন সরোয়ার, চাঁদপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) সুদীপ্ত রায়, জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, চাঁদপুর প্রেসক্লাব সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী, সময় টিভির স্টাফ রিপোর্টার ফারুক আহমেদ, কোস্টগার্ড পেডি অফিসার মোঃ হুমায়ুন কবির প্রমুখ।

মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ ও চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণ, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি, গণমাধ্যম প্রতিনিধিগণ, মৎস্যজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, বরফ কল মালিকসহ অন্যান্য দপ্তরের কর্মকর্তা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সভার শুরুতে গত বছরের সিদ্ধান্তসমূহ পর্যালোচনা করে এবার মা ইলিশ রক্ষা অভিযান সফল বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহনের পাশাপাশি প্রশাসনের সমন্বিত অভিযান পরিচালনার উপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

সভায় উন্মুক্ত আলোচনায় বক্তব্য রাখেন, হাইমচর উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মিজানুর রহমান, রাজরাজেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়্যারমান মো:হযরত আলী বেপারী, হাইমচর চরভৈরবী ইউপি চেয়ারম্যান আহমদ আলী মাস্টার, নীলকমল ইউপি চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন আহমেদ, কান্ট্রি ফিশিং বোট মালিক সমিতির সভাপতি শাহ আলম মল্লিক,জেলা আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক দেওয়ান, সাধারণ সম্পাদক মানিক দেওয়ান, সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর সরদার,জাতীয় মৎস্যজীবী সমিতির চাঁদপুর জেলা সভাপতি তছলিম বেপারী, মতলব উত্তর উপজেলা আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি ওমর আলী প্রধানিয়া, সাধারণ সম্পাদক মোঃ ওয়াসকুরুনি সরকার।

Loading

শেয়ার করুন: