ইস্তাম্বুলে পুনর্নির্বাচনেও হেরেছে এরদোয়ানের দল

তুরস্কের ইস্তাম্বুলের মেয়র পদে পুনর্নির্বাচনেও সরকারি দল হেরে গেছে। গতকাল রোববার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ৫৪ শতাংশ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) প্রার্থী একরেম ইমামগ্লু (৪৯)। প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের দল জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির (একে পার্টি) প্রার্থী সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিম তাঁর কাছে পরাজিত হন। বিজয়ী একরেমকে অভিনন্দন জানিয়েছেন এরদোয়ান।

গত ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিত প্রথম নির্বাচনে সবাইকে অবাক করে দিয়ে একরেম মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর সরকারি দল পুনর্নির্বাচনের দাবি তোলে। ২৩ জুন ভোটের দিন নির্ধারণ করে গত মে মাসের শুরুতে পুনর্নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়া হয়।

আজ সোমবার বিবিসি অনলাইন ও রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, এক টুইটে বিজয়ী প্রার্থীকে অভিনন্দন জানিয়ে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেছেন, ‘আমি একরেম ইমামগ্লুকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।’

তবে এই ফলাফলকে এরদোয়ানের জন্য আরেক বিপত্তি হিসেবে দেখা হচ্ছে। এর আগে তিনি বলেছিলেন, ‘ইস্তাম্বুল যে জিতবে, সে তুরস্ক জিতবে।’ একসময় তিনি ইস্তাম্বুলের মেয়র ছিলেন।

এদিকে জয়ের পর দেওয়া এক ভাষণে একরেম ইমামগ্লু এই শহর ও দেশের জন্য নতুন সূচনা বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ‘ইস্তাম্বুলে আমরা এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছি। এই অধ্যায় থেকে ন্যায়বিচার, সমতা ও ভালোবাসা থাকবে।’ এরদোয়ানের সঙ্গে একত্রে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করে তিনি বলেছেন, ‘মি. প্রেসিডেন্ট, ঐকতান রেখে আপনার সঙ্গে কাজ করতে আমি প্রস্তুত।’

এর আগে গত ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সরকারি দলের প্রার্থীকে অল্প ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে ইস্তাম্বুলের মেয়র নির্বাচিত হন একরেম ইমামগ্লু। ইস্তাম্বুলে ৮০ লাখের বেশি ভোট গৃহীত হয়। ১৪ হাজারের কম ভোটের ব্যবধানে ইমামগ্লু নির্বাচিত হন। ‘অনিয়ম ও দুর্নীতির’ অভিযোগ তুলে সরকারি দল একে পার্টি ইস্তাম্বুলে পুনর্নির্বাচনের দাবি তোলে। প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানও তাঁর দলের পরাজয় প্রত্যাখ্যান করেন।

তবে পুনর্নির্বাচনের ঘোষণা আসার পর একে পাটির পার্লামেন্টারি বৈঠকে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেন, ইস্তাম্বুলে পুনর্নির্বাচন দেশের জন্য ‘সবচেয়ে ভালো পদক্ষেপ’। তিনি বলেন, ‘এই সিদ্ধান্তকে (পুনর্নির্বাচন) গণতন্ত্র ও আইনি কাঠামোর মধ্যে সমস্যা সমাধানে আমাদের আকাঙ্ক্ষাকে শক্তিশালী করতে সবচেয়ে ভালো পদক্ষেপ হিসেবে দেখছি।’ তিনি দাবি করেন, মার্চে অনুষ্ঠিত ভোট ‘অবৈধ’ ছিল এবং পুনর্নির্বাচন ‘দেশটির গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’ হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করবে।

ওই সময় একরেম ইমামগ্লু পুনরায় ভোট গ্রহণের ঘোষণার নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘নির্বাচনী বোর্ড শাসক দলের মাধ্যমে প্রভাবিত হয়েছে। সমবেত সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের নীতি বিসর্জন দেব না। এই দেশ ৮ কোটি ২০ লাখ দেশপ্রেমিকে ভর্তি, যাঁরা লড়াই করবেন…গণতন্ত্রের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত।’

মার্চে নির্বাচনের আগে খুব কম লোকই একরেম ইমামগ্লুকে চিনতেন।

সরকারি দলের দাবির মুখে দেশটির নির্বাচন বোর্ড পুনর্নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়ার পর বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠে।

Loading

শেয়ার করুন: