উদ্ধারকৃত অজ্ঞাত ব্যাক্তির বাড়ি ফরিগঞ্জে

আব্দুল কাদের ॥

চাঁদপুর মেঘনা নদী থেকে ২২মে রবিবার বিকালে পুরান বাজার হরিসভা মন্দিরের সংলগ্ন এরিয়া থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ে উদ্ধারকৃত লাশের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে।

উদ্ধারকৃত আবিদ মিয়া (৫৭) এর বাড়ি ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১৬নং রুপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের পশ্চিম কাওনিয়া গ্রামের মো.আলী ব্যাপারী বাড়ি। নিহত আবিদ মিয়া মৃত কেরামত মিয়া ছেলে। উদ্ধারের পর মৃত ব্যাক্তির পকেটে থাকা মুঠোফোন ও নোটিশের সূত্র ধরেই লাশের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে, চাঁদপুর নৌ-থানার সাব-ইন্সপেক্টর রেদওয়ান।

তিনি আরও জানান, উদ্ধারকৃত লাশটি চাঁদপুর নৌ-পুলিশের পক্ষ থেকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।

নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মৃত আবিদ মিয়া ১৬ মে সকাল ১০.০০ ঘটিকায় বাড়ি থেকে ঢাকার উদেশ্য রওনা হয়। তারপর থেকে তার আর কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। আজকে তিনি মৃত লাশ হয়ে ফিরে আসছেন। খোঁজ না পেয়ে আবিদ মিয়ার স্ত্রী কুসুম বেগম ১৮ই মে ফরিদগঞ্জ থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করে।

২৩ মে সোমবার দুপুরে নিহত আবিদ মিয়া বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, আ্যম্বুলেন্স যোগে চাঁদপুর থেকে লাশ আনার পর তার নিজ বাড়ির সামনে মসজিদের সম্মুখে দুপুর দুইটায় জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

দাফনের পর আবিদ মিয়ার বড় বোনের ছেলে রবি এই প্রতিনিধিকে জানান, ১৬ই মে সোমবার রাতে মামা আমাদের বাসায় আসবেন মুঠোফোনে জানিয়েছেন। পরে তিনি রাতে আমার বাসায় না আসায় আমার স্ত্রী রোকশানার মুঠোফোনে আসার কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি রাতে আসবেন না বলে পরদিন সকাল ৭ টায় আসবেন বলে জানান এবং তিনি তখন কোথায় আছেন এমন প্রশ্ন করলে তিনি তখন ঢাকার উত্তরায় আছেন বলে জানান।

১৭ মে মঙ্গলবার পরের দিন সকাল ৭.০০ আমার বাসায় আসার কথা থাকলেও না আসায় মোবাইল ফোনে আমি তার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তাকে আর মুঠোফোনে পাওয়া যায়নি। এবং নিহতের ভাগিনা রবি আরো বলেন তাকে কলে না পাওয়ায় এক পর্যায়ে আবিদ মিয়া নিখোঁজ হওয়ার পূর্বে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী তার ক্রয়কৃত উত্তরায় ৭ নাম্বার রোডে ৬ নং বাড়ি ৬ তলা বিশিষ্ট কম্পিট ফ্লাটে খোঁজ নিতে গেলে সেখানে এরকম কোন বাড়ির হদিস পাননি। দীর্ঘ সময় খুঁজে না পাওয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন কিনা সে সন্দেহে উত্তরার স্থানীয় হাসপালে খোঁজ নিয়েও এই নামের কোন রোগীর হদিস পাওয়া যায়নি।

হাসপাতেও কোন তথ্য না পেয়ে এক পর্যায়ে উত্তরা থানায় কর্তব্যরত পুলিশের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, যেখান থেকে নিখোঁজ হয়েছে অর্থাৎ তার নিজ উপজেলা ফরিদগঞ্জ থানায় জিডি করার পরামর্শ দেয়।

পরবর্তীতে ফরিদগঞ্জ থানায় নিহতের স্ত্রীর করা জিডির সূত্রধরে তদন্তের এক পর্যায়ে জানা যায় নিহতে সবশেষ লোকেশন ১৬ মে কেরানীগঞ্জে দেখানো হয়েছে, কিন্তু তার ভাগনীর বউ রোকশানা এর সাথে ওই রাতে ফোন কলে তিনি উত্তরায় আছে বলে জানিয়েছিলেন, ১৬ মে রাতে নিহতের জানানো অবস্থান ও পুলিশের মোবাইল টেকিংয়ে পাওয়া অবস্থান ভিন্ন হওয়া ঘটনার নতুন রহস্য জন্ম দিয়েছে। মোবাইল টেকিংয়ে নিহতের সবশেষ অবস্থান ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ উপপরিদর্শক মশিউর (এস আই) জানিয়েছেন।

নিহতের বাড়িতে ফেরার কথা হয় চাচাতো ভাই ফিরোজ এর সাথে এ সময় তিনি চাঁদপুর কন্ঠের এই সংবাদকর্মীকে জানায়, আমার চাচা ঢাকায় বাড়ি কিনবেন বলে গ্রামে তার পৈত্রিক অনেক সম্পত্তি বিক্রি করেছেন। এবং ভিন্ন সময়ে তিনি ঢাকায় সম্পত্তি কিনেছেন বলে আমরা শুনেছি, কোথায় কিনেছেন,তা কাউকে বলেননি। মাঝে মধ্যেই কে বা কাহারা বাড়িতে এসে তাকে নিয়ে যেতেন,কার সাথে যেতেন, কে ছিলো তারা? সে বিষয়ে তিনি কখনোই কাউকে বলেন নি। একটা সময় শুনেছিলাম তিনি কয়েকজন মিলে সমিতির মাধ্যমে সম্পত্তি কিনেছেন। তারাই তাকে কিছদিন পর পর নিয়ে যেতেন গাড়ীতে করে, কিন্তু তা আদো কতটা সত্য কি না সে বিষয়ে জানা নেই আমাদের।

এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শহিদ হোসেন জানান, যেহেতু চাঁদপুর নৌ-পুলিশ লাশটি উদ্ধার করেছেন এবং ময়না তদন্ত করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছেন, তাই বিষয়টি চাঁদপুর থানা নৌ-পুলি তারাই দেখবে।

Loading

শেয়ার করুন: