এখনো জেলার বেশির ভাগ মানুষই অসচেতন : চাঁদপুর জেলা প্রশাসক

চাঁদপুর জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভা ২৫ জুলাই রোববার জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। ভার্চুয়ালি (জুম)মাধ্যমে সকাল ১১টায় শুরু হওয়া এ সভায় প্রাধান্য পায় করোনা পরিস্থিতি,লকডাউন কার্যকর ও কঠোর করতে নানা পদক্ষেপ, সচেতনতা বৃদ্ধিতে করোনীয়,হাসপাতাল পরিস্থিতি ও ব্যবস্থপনা ইত্যাদি বিষয়গুলো।

সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক জানান, জেলায় করোনা পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণে আসছে না। বরং দিন দিন এর প্রকোপ বেড়েই চলেছে। গত ২৪ ঘন্টায় জেলায় ৫ জন করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। আক্রান্ত হচ্ছেন বহুজন। তিনি অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানান, এখনো জেলার বেশির ভাগ মানুষই অসচেতন। আর এই অসচেতনতা এখন বেশির ভাগই পরিলক্ষিত হচ্ছে, শিক্ষিত সচেতনদের মধ্যেই। ব্যক্তিগত সুরক্ষা কেউই নিচ্ছেন না। কোন কারন ছাড়াই সচেতনরাই ঘর থেকে বেরিয়ে পড়ছেন। তিনি বলেন, রিক্সা চলার সুযোগে একটি রিক্সায় ৩/৪ জন বসছেন।

জেলা প্রশাসক আরো বলেন, এই অবস্থা কোন ভাবেই চলতে দেয়া যায় না। তিনি সভায় অংশ নেয়া কমিটির সদস্যদের বক্তব্যের আলোকে সর্বসম্মতিক্রমে যে সিদ্ধান্ত নেন তাহলো : এখন থেকে জেলা শহর পৌর এলাকা, এবং অন্যান্য পৌরসভা এলাকাসহ অতিরিক্ত লোকসমাগম এলাকাগুলোতে রিক্সা চলাচলও বন্ধ করা হলো। কাল থেকে এটি আরো কঠোর করা হবে। শুধুমাত্র রোগী আনা নেয়া ছাড়া কোন রিক্সা সড়কে চলাচল করতে পারবে না। আর উপযুক্ত কোন কারণ ছাড়া ঘর থেকে বের হবেন সেজন্য জরিমানাই নয়, গ্রেফতার হবেন। সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং আমার নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটদের নির্দেশ প্রদান করছি।

জেলখানার জেলারের উদ্দেশ্যে বলেন, গ্রেফতার করাদের আলাদা সেলে রাখবেন যাতে এদের দ্বারা অন্যরা সংক্রমণ না হয়। তিনি বলেন, এই পরিস্থিতির আলোকে এই কঠোর সিদ্ধান্ত ছাড়া কোন উপায় নেই। আমি আশা করি, আজ থেকে এই বিব্রত পরিস্থিতির শিকার না হতে এবং করোনা আক্রান্ত থেকে নিজেকে রক্ষা, পরিবারকে রক্ষা এবং অন্যকে বাঁচতে ঘরে অবস্থান করুন। আর আপনারা যারা কর্মহীন হবেন, যদি খাদ্য সংকটে পড়েন আপনার খাদ্য সহায়তা পেতে ৩৩৩ নাম্বারে ডায়াল করবেন, খাদ্য পৌঁছে দেয়া হবে। এছাড়া প্রত্যেক উপজেলা নির্বাহী, পৌর মেয়রসহ আমাদের যারা জনপ্রতিনিধি আছেন তারা কন্ট্রোল রুমের ব্যবস্থা করবেন। জনপ্রতিনিধিরাও যোগাযোগ রক্ষা করে চলবেন। তিনি বলেন, নতুন করে যে বরাদ্দ, তার ছাড় ২/১ দিনের মধ্যেই আপনারা পেয়ে যাবেন। যার যার বরাদ্দ, সেটি দিয়ে দেয়া হবে। আপনারা সুষ্ঠু বন্টন করবেন।

জেলার করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় তিনি আপডেট জানতে বিশেষ করে সিভিল সার্জন ও ২৫০ শয্যা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। সিভিল সার্জন ডা. মোঃ সাখাওয়াত উল্লাহ জানান, করোনা পরিস্থিতি এখানে চরম অবস্থায় এবং দিনদিনই অবনতি হচ্ছে। গড়ে এখন ৩’শ এর উপরে ম্পল নেয়া হচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টায় ৫ জন হাসপাতালেই মারা গেছেন করোনায়। এ যাবৎ জেলায় ৭ হাজার ৯ শ ৫৭ জন আক্রান্ত। টেস্ট হিসাবে আক্রান্তের হার স্যাম্পল এ কদিনই ৪৫ থেকে ৫৫। যা অনেক উদ্বেগজনক। জেলার ভেতরে মারা যাওয়ার সংখ্যা আজ পর্যন্ত ১৫৪ জন। তাছাড়া চাঁদপুরে বাড়ি ঢাকা বা অন্য কোথায়ও মারা গেছেন, এমন আরো ১৯৩ জন করোনায় মৃত্যুবরণ করেছেন। সেই হিসাবে জেলার অধিবাসী ৩৪৭ জন করোনায় মৃত্যুবরণ করেছেন। তিনি বলেন, রোগি যে হারে বাড়ছে, তাতে এখন অক্সিজেন সংকটও দেখা দিয়েছে। রোগির চাপ বাড়ছে সদর হাসপাতালের দিকে। উপজেলায় করোনা বেড থাকা সত্ত্বেও সেসব এলাকার রোগিরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালমুখি। রোগিদের এই প্রবনতারোধে আমাদের হাসপাতাল ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং করোনা প্রতিরোধ কমিটির সহযোগিতা প্রয়োজন। এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, প্রতিটি উপজেলা হাসপাতালেই ২০টি করে করোনা বেড বাড়ানো হয়েছে।

সিভিল সার্জন বলেন, অক্সিজেন সাপ্লাই যারা নিয়মিত দিচ্ছেন, সেই আবুল খায়ের গ্রুপ কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছে অক্সিজেনের পরিমান একটু বাড়িয়ে দেয়ার জন্যে। তাদেরও বোধহয় সংকট আছে, কারণ তারা সারা বাংলাদেশেই সাপ্লাই দেয়। তারপরও তারা বিষয়টি আমলে নিয়েছেন। এদিকে ২৫০ শয্যা হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ হাবিবুল করিম এবারও কোন স্বস্তির খবর দিতে পারলেন না। তিনি বল্লেন- ২৫০ শয্যা হাসপাতালে যে অক্সিজেন প্লান্টটির কাজ সম্পন্ন হয়ে আছে তা চালু করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন লাগবে। রোববার সকালে এক্সেপটা গ্রুপ যারা এই কাজটি করছে তারা বিষয়টি তাকে জানিয়েছেন। তিনিও বল্লেন, হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা, বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। আইসিওর ৩ বেড কবে চালু হবে তাও তিনি নিশ্চিত করে বলতে পারলেন না। বল্লেন – কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ চলছে। অক্সিজেন সংকট দেখা দিচ্ছে। তত্ত্বাবধায়কের কথা শুনে জেলা প্রশাসক বলেন, মানুষ শুধু শুনেই যাচ্ছে – এক সপ্তাহের মধ্যেই চালু হয়ে যাচ্ছে অক্সিজেন প্লান, কিন্তু সেই সপ্তা তো আসছে না। আর এটি চালু হতে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন লাগবে এটি এতো পরে কেন? আর যদি বলেই থাকে তাহলে আজই দ্রুত অনুমোদন চেয়ে চিঠি লিখুন। প্রয়োজনে আমাদের মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী মহোদয়ের সাহায্য নিন।

চাঁদপুর পৌর মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল বলেন, আমরা আমাদের পৌরসভার উদ্যোগে একটা কন্ট্রোলরুম খুলছি। এদিকে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশে আমরা সোমবার থেকে আমরা স্বেচ্ছাসেবক টিম গঠন করছি। প্রতিটি ওয়ার্ডে, গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে তারা স্বাস্থবিধি মেনে কাজ করবে। তিনিও বলেন, আমাদের অযথা ঘোরাঘুরি এবং অপ্রয়োজনে রিক্সা চলতে দেয়া যাবে এই কঠোর লকডাউনে। আমার পৌরসভার পক্ষে আমরা যা যা করোনীয় সেটা আমরা আমাদের সাধ্যের মধ্যে থেকে করবো। মেয়র বলেন, করোনা নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিধিনিষেধ মানা ছাড়া কোন বিকল্প নেই। তাতে যা করনীয় সেটা আমাদের সবাইকে করতে হবে।

মাননীয় পুলিশ সুপারের প্রতিনিধিত্বকারি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপারেশন ও অপরাধ) সুূদীপ্ত রায় বলেন, আমাদের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে অবশ্যই হার্ডলাইনে যেতে হচ্ছে। কাল সোমবার থেকে আমরা রাস্তায় রিক্সা চলাচলও বন্ধ করে দিচ্ছি। অপ্রয়োজনীয় চলাফেরা করলে এবং মাস্কটা না পড়লে কতোটা আমাদের কঠোর হতে হবে, তা জেলা প্রশাসক মহোদয়ও বল্লেন। করোনারোধে আমাদের দায়িত্বের মধ্যে থেকে আমরা তা করবো। তিনি বলেন, এই করোনাকালে কর্মহীন মানুষের পাশে সরকারের খাদ্য সহায়তা নিয়ে সমাজের বিত্তশালীরাও দাঁড়ান। আমাদের পুলিশ প্রশাসনও এসপি মহোদয়ের নির্দেশে যেটুকু পারি, সেটুকু আমরাও শুরু করতে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, আমাদের ‘৭১ এর যুদ্ধটা ছিলো সদৃশ্য শত্রুদের বিরুদ্ধে। আর এই যুদ্ধ একটা অদৃশ্য শত্রুর বিরুদ্ধে। ‘ ৭১এও আমরা মোকাবেলা করে পেরে উঠেছি, এবারও তা অবশ্যই পারবো, যদি আমরা সচেতন থাকি, নিয়মগুলো মেনে চলি। ডিডি এনএস আই শেখ আরমান আহমেদ সভায় জানান, তার গাড়ি চালক আনোয়ার হোসেন ( ৪৩) করোনা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তার অকাল মৃত্যুতে তিনি সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন। জনাব আরমান বলেন, আমদের আরো বেশি সচেতন হতে হবে। অযথা ঘোরাফরা, রিক্সায় যাতায়াত আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এগুলো রুখে দিতে হবে।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ তার বক্তব্যে বলেন, এ সময়ে কঠোর হওয়া ছাড়া কোন বিকল্প নাই। আমিও লক্ষ করছি, একটা উছিলা ধরে রিক্সায় বা হেটে অপ্রয়োজনীয় লোক রাস্তায় ঘুরে। শুধু রিক্সাই না, কেউ সাইকেলে ঘুরে ঘুরে বেড়ায়। এসব চলতে দেয়া যায় না। সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু নঈম দুলাল পাটোয়ারী বলেন,আমি সদর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে জীবানুনাশক যন্ত্রের ব্যবস্থা করে দেবো এবং ৫ টি অক্সিজেন সিলিন্ডার দেবো। তিনি বর্তমানে বিদ্যুৎ বিভ্রাট কমিয়ে আনারও অনুরোধ জানান। এছাড়া জেলা এলজিইডি প্রকৌশলীও ৫ টি অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করে দেবেন বলে আশ্বাস দেন। মুক্তি যোদ্ধা জেলা সংসদ কমান্ডার এমএ ওয়াদুদ বলেন,এই কঠোর লকডাউনে আমাদের মুক্তি যোদ্ধাদের পক্ষ থেকে যে সহযোগিতার দরকার তা আমরা করবো। তিনি সভাপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, মতলব উত্তর ভবন নির্মান শেষ হলেও তা হস্তান্তর হচ্ছে না ও হাজিগন্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ভবন জটিলতা। এগুলো বিষয়ে তড়িৎ ব্যবস্থা নেয়ার ব্যবস্থা নিতে আহবান জানান তিনি। এছাড়া হাইমচর উপজেলা চেয়ারম্যন নুর হোসেন পাটওয়ারী গত আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় করোনা রোগি আনা নেয়ার ব্যপারে যে এম্বুলেন্স সহায়তা দেয়ার কথা দেয়ার ব্যাপারে যে প্রতিশ্রুতি দেন, তার ব্যাপারে জেনারেল হাসপাতালের কেউ যোগাযোগই করেননি বলে জানান। পরে জেলা প্রশাসক এ দায়িত্ব চাঁদপুর পৌরসভার মেয়রকে দিলে তিনি তা গ্রহন করেন। চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী তার বক্তব্যে বলেন, কর্মহীন রিক্সা শ্রমিকসহ বিভিন্ন শ্রমজীবী মানুষের পাশে খাদ্য সহায়তায় জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, পৌর প্রশাসন, এবং সরকারের অন্যান্য স্থানীয় সরকারের পাশাপাশি যারা বিত্তবান, ধনাঢ্য ব্যক্তি আছেন, তারা দাঁড়ান। না হলে অনেক মানুষই কঠোর লকডাউনের এই সময়ে সমস্যায় পড়ে যাবে। তিনি বলেন, অনেকেরই সামর্থ্য আছে তা করার। শুধু আপনি আপনাকে একটু জাগিয়ে তুলেন। তিনি বলেন, সচেতনতা সৃষ্টিতে প্রথম আইন বিধিনিষেধ মানতে হবে যারা আমরা নিজেদের সচেতন বলে দাবি করি।

সভা শেষান্তে জেলা প্রশাসক তার বক্তব্যে বলেন, আমার জেলা প্রশাসনের জেলা প্রশাসক ( রাজস্ব) দাউদ হোসেন চৌধুরী করোনা আক্রান্ত। তার ফুসফুসের ৬০ ভাগেই করোনা ভাইরাস ক্ষতি করে ফেলেছে। তিনি ঢাকায় চিকিৎসাধীন এবং শংকামুক্ত নন। আমাদের এমনিতেই প্রশাসনে লোকবল কম। তার উপর এই অবস্থা। আমাদের অফিসারসহ সবাইকেই করোনা মোকাবেলায় কাজ করতে, আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় বাইরে বের হতে হচ্ছে। আমরা মনোবল হারাবো না, কাজ করে যাবো। তিনি বলেন, যারা অহেতুক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে অহেতুক প্রপাকান্ডা ছড়ান, বাজে মন্তব্য করেন, তা থেকে বিরত থাকুন। যারা এসব করেন তাদের উদ্দেশ্য যে কোনভাবেই ভালো না সেটা আমরা বুজতে পারি এবং এসবে নেয়া হবে আইনানুগ ব্যবস্থা। জেলা প্রশাসক বলেন, জীবন বাঁচাতে হবে, আর এরজন্য আমাদের যতোটা কঠোর হওয়ার, তা আমরা হবো। তিনি জেলার সরকারি প্রত্যেক বিভাগ বা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের বলেন, যেহেতু করোনা মহামারী সংকট মোকাবিলায় আজ আলোচনা হওয়ায় ডিপার্টমেন্ট ওয়ারি উন্নয়ন সংক্রান্ত আলোচনা বিশদভাবে করতে পারলাম না, সেহেতু আপনারা যারা আজ অংশ নিলেন, তারা লিখিতভাবে আমাকে তা একটু জানিয়ে দেবেন। এ সভায় আরো সংযুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন,ফরিদগঞ্জ পৌরসভা মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের পাটওয়ারী, মতলব উত্তর উপজলা চেয়ারম্যান আঃ কুদ্দুস, মতলব পৌর মেয়র আওলাদ হোসেন লিটন, পিডিবি নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান, জেলা তথ্য অফিসার মনির হোসেন প্রমুখ। এছাড়া সভায়, শাহরাস্তি পৌর মেয়র,সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ জেলার বিভিন্ন সরকারি অফিসের কর্মকর্তারা সংযুক্ত ছিলেন।

Loading

শেয়ার করুন: