চাঁদপুরে অনিয়মের অভিযোগে জেলেদের মাঝে ভ্যান বিতরণ স্থগিত, তদন্ত কমিটি গঠন

চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সারিবদ্ধ ভাবে রাখা হয়েছে সম্পূর্ণ নতুন তৈরীকৃত ২০টি রিকশাভ্যান। প্রতিটি ভ্যানের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন ২০ জন জেলে। জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ উপলক্ষে বেকার জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থানের অংশ হিসেবে এই রিকশাভ্যান বিতরণের সকল অনুষ্ঠানিকতাও শেষ। জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ অন্যান্য অতিথিদের সাথে নিয়ে জেলা মৎস্য অফিস কর্তৃক বাছাইকৃত ২০ জেলের হাতে তুলে দেন নতুন ভ্যান গাড়ির চাবি।

সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই না করার কারণে অপেশাদার বেশ ক’জন জেলের হাতে চলে যায় ২৫ হাজার টাকা মূল্যের রিকশাভ্যান। ঠিক এমন সময় অভিযোগ উঠে পূর্ব থেকে নির্ধারণ করা এই ২০ জেলের মধ্যে মাত্র ২জন ছাড়া বাকিরা কেউ জেলে নয়।

যেসব ব্যক্তিদের জেলে হিসেবে নতুন রিকশাভ্যান দেয়ার জন্যে আনা হয়েছে তাদের কেউ মৎস্য আড়তের কর্মচারী, কেউ সমিতির কর্মচারী। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসক বাকি ভ্যানগাড়িগুলো বিতরণ বন্ধ করে দেন।

৭ এপ্রিল বুধবার বেলা ১১টায় চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মুখে জেলা প্রশাসন ও জেলা মৎস্য বিভাগের বাস্তবায়নে জেলেদের মাঝে উপকরণ বিতরণকালে এ ঘটনা ঘটে।

এ সময় চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মো. জিল্লুর রহমান জুয়েল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল জামান, চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুল বাকী, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শানজিদা সাহনাজ উপস্থিত ছিলেন।

এসময় অপেশাদার জেলেদের মাঝে ভ্যান গাড়ি বিতরণ বিষয়টি উপস্থিত সবাই অবাক হন। জেলা মৎস্য বিভাগের এমন কান্ডে দায়িত্বশীলতার অভাব রয়েছে বুঝতে পেরে জেলা প্রশাসক ভ্যান গাড়ি বিতরণ বন্ধ এবং যেগুলো বিতরণ হয়েছে সেগুলো ফেরৎ আনার তাৎক্ষণিক নির্দেশনা প্রদান করেন।

এদিকে কি কারণে অপেশাদারদের হাতে জেলেদের উপকরণ বিতরণ হয়েছে বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য ৩ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করে দিয়েছেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ। তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা শাহনাজ ও সদস্য সচিব নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান মাহমুদ ডালিম।

এদিকে, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুল বাকী এমন অনিয়মের দায় চাপালেন জেলে নেতাদের ওপর। অন্যদিকে, চাঁদপুর জেলা মৎস্যজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক তসলিম বেপারী গোঁজামিল দিয়ে অনিয়ম স্বীকার করে জনপ্রতিনিধিদের দোষারোপ করেছেন।

তিনি বলেন, আজ বুধবার যে ২০ জন জেলেকে এখানে রিকশাভ্যান বিতরণের জন্য নিয়ে আসা হয়েছে, তার মধ্যে দুইজন প্রকৃত জেলে।

চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছি। রিকশাভ্যান বিতরণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র অ্যাডভোকেট জিল্লুর রহমান জুয়েল বলেন, বিষয়টি অবশ্যই ভেবে দেখা দরকার। কারণ, সরকারের অর্থ অপচয় করার কোনো সুযোগ নেই।

Loading

শেয়ার করুন: