চাঁদপুর পৌরসভার ১২৫ বছর উপলক্ষে সাংস্কৃতিক পক্ষের উদ্বোধন

নিজস্ব প্রতিবেদক :

চাঁদপুর পৌরসভার গৌরবের ১২৫ বছর উপলক্ষে ১৬ দিনব্যাপি সাংস্কৃতিক পক্ষের উদ্বোধন হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) চাঁদপুর পৌরসভার আয়োজনে ও সাংস্কৃতিক পক্ষ উদযাপন পরিষদের ব্যবস্থাপনায় জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনের সামনে থেকে বিকেল পাঁচটায় ব্যানার ও নানা রংয়ের বেলুন হাতে নিয়ে একটি বর্ণাঢ্য রেলি বের হয়।

পরে রেলিটি শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনের সম্মুখে এসে শেষ হয়।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান।

তিনি বক্তব্যে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা করেছেন ২০৪১ সালের মধ্যে সমৃদ্ধ উন্নত বাংলাদেশ হবে। তখন কোন বৈষম্য থাকবে না, সবাই হবে শিল্পপতি। মৌলিক সুবিধা নিশ্চিত করার আরেকটি জায়গা হচ্ছে পৌরসভা। এখন আমরা অনেকে নিয়মিত ট্যাক্স দেই না। তখন কিন্তু নিয়মিত ট্যাক্স দিব।

তিনি বলেন, সংস্কৃতি চর্চা যত হবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রিতি ততই দূরীভূত হয়। সাংস্কৃতিক চর্চাকে অব্যাহত রাখতে হবে।

তিনি আরও বলেন, গত কয়েকদিন আগে মেয়েরা সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। আমরা পরিসংখ্যানে দেখলাম বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে চাঁদপুরে প্রায় ১১৫৬ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় অংশগ্রহণ করেছে। এর মধ্য থেকে ১৬ টি দল খেলায় অংশ নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১০ সালে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ও ২০১১ সালে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলেতুন্নেছা মজিব গোল্ড কাপ এর উদ্যোগ নিয়েছেন। আর সেই ফল সাফ ফুটবল টিমে মেয়েরা চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেখিয়ে দিয়েছে।

চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মোঃ জিল্লুর রহমান জুয়েলের সভাপতিত্বে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধক এর বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আবৃত্তি পরিষদ ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আহ্কাম উল্লাহ।

তিনি বলেন,আমার ছোট ভাই ও বোনের শ্বশুড় বাড়ি চাঁদপুর। চাঁদপুরের সাথে আমার আত্মীয়ের সম্পর্ক রয়েছে। আমি জরুরি কাজের জন্য আসতে পারি নাই। তার জন্য দুঃখিত। তবে চাঁদপুরের ইলিশ খেতে অবশ্যই আসব। সাংস্কৃতিক কর্মীদের দাবী আদায়ে ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা সকলে কাজ করবো।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদিপ্ত রায়। তিনি বক্তব্যে বলেন, একটি দেশ ও একটি জাতি সংস্কৃতি ছাড়া এগিয়ে যেতে পারে না। এই চাঁদপুরে অনেক গুনীজন ও সংস্কৃতি ব্যক্তির জন্ম হয়েছে। সংস্কৃতির কোন বিকল্প নেই। সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে চাঁদপুরকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।

আনন্দধ্বনি সংগীত একাডেমীর অধ্যক্ষ রফিক আহমেদ মিন্টু ও বর্ণচোরা নাট্যগোষ্ঠির সাধারণ সম্পাদক শরীফ চৌধুরীর যৌথ সঞ্চালনায় সম্মানিত অতিথির বক্তব্য রাখেন সাংস্কৃতিক সংগঠক ও জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সাবেক সাধারণ সম্পাদক অজয় কুমার ভৌমিক, চাঁদপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র মোহাম্মদ আলী মাঝি।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাংস্কৃতিক পক্ষ উদযাপন পরিষদের সমন্বয়ক জিয়াউল আহসান টিটো।

সভায় শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি গিয়াসউদ্দিন মিলন,জেলা কালচারাল অফিসার আয়াজ মাহমুদ,বিশিষ্ট্য কি ও ছড়াকার ডাঃ পিযুষ কান্তি বড়ুয়া।

এসময় চাঁদপুর পৌরসভার সচিব আবুল কালাম ভূইয়া, নির্বাহী প্রকৌশলী এএইচ শামসুদ্দোহা, চাঁদপুর সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ আবদুর রশিদ, চাঁদপুর পৌরসভার প্রশাসনিক কর্মকর্তা মফিজ উদ্দিন হাওলাদার, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা সৈয়দ মুশিউর রহমান, মেয়র মহোদয়ের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মোঃ জাহিদুর রহমান জহির, এসেসর আসাদুজ্জামান শাহরয়ার, লাইসেন্স ইন্সপেক্টর মোশাররফ হোসেন, সহকারী বাজার পরিদর্শক মোঃ এমদাদ হোসেন মিলন, পশ্চিম বিষ্ণুদী পৌর শহীদ জাবেদ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ ওমর ফারুক, পৌর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ফারজানা লাকীসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, চাঁদপুর পৌরসভার গৌরবের ১২৫ বছর উপলক্ষে সাংস্কৃতিক পক্ষ ২২ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়ে চলবে আগামী ১২ অক্টোবর। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আলোচনা সভা শেষে রাত ৮ থেকে সাড়ে ৯ টায় পর্যন্ত চাঁদপুর অনুপম নাট্যগোষ্ঠির আয়োজনে নাটক ক্ষ্যাপা পাগলার প্যাঁচাল মঞ্চস্থ হয়। ২৩ সেপ্টেম্বর শুক্রবার রাত ৮ থেকে সাড়ে ৯ টায় পর্যন্ত মঞ্চস্থ হবে ঢাকা নাট্যদলের আয়োজনে নাটক পুণ্যাহ। মোট ৩২ নাট্যদল এখানে অংশ নেবে। এর মধ্য থেকে চাঁদপুরের ২২ টি নাট্যদল অংশ নেবে।

শেয়ার করুন: