চাঁসকে বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন

১৭ মার্চ (বুধবার) মেঘনা পাড়ের বাতিঘর বলে খ্যাত চাঁদপুর সরকারি কলেজে যথাযোগ্য মর্যাদায় হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০১তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন করা হয়।

‘‘বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন, শিশুর হৃদয় হোক রঙিন’’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ দিবসটির কর্মসূচির শুভ সূচনা হয়। চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে সকাল সাতটা এক মিনিটে কলেজ ক্যাম্পাসে বঙ্গবন্ধুর স্মারক-স্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন করেন কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর অসিত বরণ দাশ, উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ আবুল খায়ের সরকার এবং বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধানগণ।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর শুভ জন্মদিন উপলক্ষে সকাল দশটায় কলেজ শিক্ষকবৃন্দ এবং উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ আবুল খায়ের সরকারকে সাথে নিয়ে কেক কাটেন কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর অসিত বরণ দাশ। সকাল সাড়ে দশটায় শুরু হয় আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান।

ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান এবং সাহিত্য ও সংস্কৃতি কমিটির আহবায়ক মোঃ ওয়াহিদুজ্জামানের সভাপ্রধানে আলোচনা সভায় পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন আরবি ও ইসলাম শিক্ষা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর হাফেজ মোহাম্মদ রুহুল আমিন এবং পবিত্র গীতা থেকে পাঠ করেন ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক গোপাল কৃষ্ণ ভৌমিক।

আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক মোঃ শামসুল হক, ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোঃ আবুল বাশার, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান মোঃ হাবিবুর রহমান মিয়া, সমাজকর্ম বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর মোঃ আলাউদ্দিন এবং অর্থনীতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ড. মোঃ জসিম উদ্দিন।

কবি টোকন ঠাকুরের ‘‘মহাকব্যের ট্র্যাজেডি’’ কবিতাটি আবৃত্তি করেন হিসাববিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক মহসীন শরীফ এবং স্বরচিত কবিতা ‘‘জার্নি টু ইটারনিটি’’ আবৃত্তি করেন ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক মোঃ আলী আজগর ফকির।

অধ্যক্ষ প্রফেসর অসিত বরণ দাশ সৈয়দ শামসুল হকের ‘‘আমার পরিচয়’’ কবিতাটি আবৃত্তি করেন। সকল বক্তাই দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন এবং গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার সাথে স্মরণ করেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি ও স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। সংগীত পরিবেশন করেন আরবি ও ইসলাম শিক্ষা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক খালেদ ইকবাল।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর মোঃ আবুল খায়ের সরকার গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্টের সকল শহীদকে, মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী সকল বীরসেনানীকে।

উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ আবুল খায়ের সরকার বলেন, ‘‘বঙ্গবন্ধু ছিলেন মহান হৃদয়ের মানুষ, শিশুদের খুব ভালোবাসতেন, শিশুদের প্রতি তাঁর মন ছিল সবসময় উদার, তাই তাঁর জন্মদিনটি জাতীয় শিশু দিবস। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণে আমাদের সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।’’
অধ্যক্ষ প্রফেসর অসিত বরণ দাশ তাঁর বক্তব্যে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ আগস্টের সকল শহীদদের, গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মদানকারী সকল বীরসেনানীদের।

তিনি বলেন,‘‘ বঙ্গবন্ধু ছিলেন অসাধারণ নেতৃত্বের গুণাবলী সম্পন্ন একজন মানুষ। তাঁর জন্ম না হলে আমরা পেতাম না স্বাধীন বাংলাদেশ। তাঁর জীবনের চৌদ্দটি বছর কেটেছে জেলখানায়, শুধুমাত্র এদেশের মানুষের মুক্তির জন্য। শিশুদের প্রতি অকৃত্রিম ভালবাসা ছিল তাঁর। শিশুদের মধ্যে তিঁনি সোনার বাংলা গঠনের স্বপ্ন দেখেছিলেন।’’

বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোঃ সাইদুজ্জামানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক পরিষদ সম্পাদক এবং ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কিউ এম হাসান শাহরিয়ার।

আলোচনা শেষে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। বাদ যোহর কলেজ কেন্দ্রীয় মসজিদে মিলাদ ও বিশেষ মোনাজাতের মাধ্যমে সমাপ্তি ঘটে তাৎপর্যপূর্ণ দিবসটির। বঙ্গবন্ধুর স্মারক স্তম্ভে শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদনের সম্পূর্ণ অনুষ্ঠানটি ফেসবুক লাইভে সম্প্রচার করা হয়।

Loading

শেয়ার করুন: