চেয়ারম্যান সেলিম খানের নিজস্ব অর্থায়নে গৃহহীনদের জন্য ৪৬টি সেমিপাঁকা ঘর প্রদান

স্টাফ রিপোর্টার ॥

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী বা মুজিবর্ষে ‘কোনো মানুষ ঘরছাড়া থাকবে না’ এমন ঘোষণা দেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। ‘যার জমি আছে, ঘর নেই’ এ প্রকল্পের আওতায় দেশের ৬৪ জেলার তৃণমূল পর্যায়ে এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে প্রশাসন থেকে শুরু করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা মাঠে নেমে পড়েন। চাঁদপুরের জেলা প্রশাসনের ঘোষণা’র পর চাঁদপুর সদর উপজেলার ১০নং লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ সেলিম খান তার নিজস্ব অর্থায়নে এবং তত্ত্বাবধানে এ প্রকল্পটি গ্রহণ করেন। তার ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের ওয়ার্ড সদস্যদের মাধ্যমে ‘যার জমি আছে, ঘর নেই’ এমন তালিকা তৈরি করেন। তালিকা তৈরি’র পর নিরবে-নিঃশব্দে কোনো রকম প্রচার-প্রচারণা ছাড়াই ১০নং লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ সেলিম খান তার নিজস্ব অর্থায়নে ৪৬টি পরিবারের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা বাস্তবায়নে কাজ শুরু করেন।

ইতোমধ্যে চাঁদপুর সদর উপজেলার ১০নং লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৭টি ঘর নির্মাণ করে গৃহহীন পরিবারকে বসবাস করার জন্য তাদেরকে সেমিপাঁকা ঘরগুলো বুঝিয়ে দিয়ে হস্তান্তর করা হয়। বাকি ২৯টি ঘরের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে; যা দ্রুত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন হলে গৃহহীন পরিবারকে বুঝিয়ে দেয়া হবে। শুধু ঘরই নয়, ওই সকল পরিবারকে বিদ্যুৎ মিটার থেকে শুরু করে সুপেয় পানি ব্যবহারের ব্যবস্থাও করে দেয়া হয়েছে।

এ প্রকল্পটি শুরুর আগে চাঁদপুর সদর উপজেলার ১০নং লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ সেলিম খান স্থানীয় সাংসদ শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র বরাবরে গৃহহীন পরিবারের মাঝে নিজস্ব অর্থায়নে ৪৬টি ঘর নির্মাণ করে দেবেন মর্মে লিখিতভাবে অবহিত করেন। যার অনুলিপি দেয়া হয়েছে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসন ও সদর উপজেলা প্রশাসনকে। সে কারনেই চাঁদপুরের জেলা প্রশাসন এক পত্রের মাধ্যমে ১০নং লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ সেলিম খানের নিজস্ব অর্থায়নে ৪৬টি ঘর নির্মাণে’র অগ্রগতি সমন্ধে জানতে চেয়েছেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ সেলিম খান পত্রের মাধ্যমে ১৭টি ঘর নির্মাণ করে গৃহহীনদের বসবাসের জন্য বুঝিয়ে দিয়েছেন মর্মে তার তথ্যাদি লিখিতভাবে এবং দালিলিকভাবে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসনকে অবহিত করেন।

‘জমি আছে, ঘর নেই’ এ প্রকল্পের মাধ্যমে চাঁদপুর সদর উপজেলার ১০নং লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নে ঘর পাওয়া পরিবারগুলো হচ্ছে : আমজাদ আখন (পিতা- ইদ্রিস আলী আখন), ইসমাইল দেওয়ান (পিতা- শাহাবুদ্দিন দেওয়ান), জাকির হোসেন ফরাজী (পিতা- আশ্রাফ আলী ফরাজী), মমতাজ বেগম (পিতা- ছাদিম হাওলাদার), বাদল হাওলাদার (পিতা- ছাত্তার হাওলাদার), শাহাদাত খান (পিতা- আজিজ খান), নাছির পাটওয়ারী (পিতা- হাবিবুল্লাহ পাটওয়ারী), সুমন পাটওয়ারী (পিতা-আবু সুফিয়ান পাটওয়ারী), আনিছুর রহমান মন্টু (পিতা- আঃ জলিল মিয়া), জাকির হোসেন খান (পিতা- ইউনুছ খান), মনির হোসেন খান (পিতা- ইউনুছ খান), মমতাজ বেগম (পিতা- আবুল খায়ের), হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া (পিতা- মোহাম্মদ ভূঁইয়া), শাহিদা বেগম (পিতা- ইব্রাহিম দর্জি), মহসিন খান (পিতা- সিরাজুল ইসলাম), মাহমুদুল্লাহ্ গাজী (পিতা- মনতাজ গাজী) ও মাহবুব খান।
উল্লেখিত পরিবারগুলো এখন চাঁদপুর সদর উপজেলার ১০নং লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ সেলিম খানের নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত সেমিপাঁকা ঘরে বসবাস করছে। বাকি ২৯টি গৃহহীন পরিবার খুব সহসাই নির্মানাধীণ সেমিপাঁকা ঘরে বসবাস করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন নির্মানাধীণ দায়িত্বে থাকা স্থানীয় ওয়ার্ড সদস্যরা।

লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ড কমলাপুর গ্রামে হাওলাদার বাড়ির বাদল হাওলাদার , একই গ্রামে পাটোয়ারি বাড়ি সুমন পাটোয়ারী এবং দেওয়ান বাড়ির ইসমাইল দেওয়ানের ঘর।

উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চাঁদপুর-৩ আসনের স্থানীয় সাংসদ, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি চাঁদপুর সদর-হাইমচর উপজেলার নদীর তীরবর্তী এলাকার মানুষকে নদী ভাঙ্গনরোধে স্থায়ীভাবে বাঁধ রক্ষা এবং নদী ভাংতি ও গৃহহীন মানুষজনকে পুনর্বাসন করার বিষয়ে নির্বাচনী প্রচারনাকালে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। নির্বাচিত হওয়ার পর স্থানীয় সাংসদ ডাঃ দীপু মনি’র দেয়া নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠনের সাথে সাথেই চাঁদপুর সদর-হাইমচরবাসীর কল্যাণে নদী ভাঙ্গনরোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের পাশাপাশি নদী ভাংতি গৃহহীন মানুষদের পুনর্বাসনের লক্ষে চাঁদপুর সদর উপজেলার ১০নং লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী’র অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী’র তত্বাবধানে বেশক’টি আশ্রয়ন প্রকল্প নির্মাণ করে। নির্মানাধীন ওই সকল আশ্রয়ন প্রকল্পগুলোতে চাঁদপুর সদর উপজেলার ১০নং লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের নদী ভাংতি ও গৃহহীন ২ হাজার পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়। নির্মিত ঘরসহ জমি চাঁদপুরের জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে বুঝিয়ে দেয়া হয়। ওই সকল আশ্রয়ণ প্রকল্পে সাড়ে ৪ একর জমি ১০নং লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ সেলিম খান জনস্বার্থে এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী’র অগ্রাধিকার প্রকল্প বাস্তবায়নে দালিলিকভাবে সরকারকে বিনাঅর্থে জমি দান করে দেন।

এ সকল আশ্রয়ন প্রকল্পে গৃহহীন ও নদী ভাংতি মানুষজনকে শুধু ঘর নয়, ঘরের পাশাপাশি বৈদ্যুতিক আলো থেকে শুরু করে সুপেয় পানি পান করার ব্যবস্থা করে দেয়া হয়। চাঁদপুর সদর উপজেলার ১০নং লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নে নদী ভাংতি ও গৃহহীন পরিবারের সদস্যরা এ সকল আশ্রয়ন প্রকল্পে এখন সুখে এবং পরম শান্তিতে বসবাস করছে।

Loading

শেয়ার করুন: