মতলব উত্তরের ১৪ ইউপি নির্বাচনে নৌকার মাঝি হতে চান ৯৯ জন

মনিরা আক্তার মনি:

মতলব উত্তরের ১৪টি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেতে চান ৯৯ জনেরও বেশি নেতা-কর্মী। বিভিন্ন ইউনিয়নে তৃণমূল বর্ধিত সভায় ৯৯জন প্রার্থী হওয়ার জন্য জীবন বৃত্তান্ত জমা দিয়েছে। এ ছাড়াও অনেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয় ধানম-ি থেকে দলীয় মনোনয়নপ্রত সংগ্রহ ও জমা দিয়েছেন।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের নির্দেশে উপজেলা আওয়ামী লীগ ১৪টি ইউনিয়ন তৃণমূল বর্ধিত সভা করে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের কাছ থেকে জীবন বৃত্তান্ত গ্রহণ করে। ষাটনল ইউনিয়নে ৭জন, সাদুল্লাপুর ইউনিয়নে ১১জন, বাগানবাড়ি ইউনিয়নে ৭জন, ইসলামাবাদ ইউনিয়নে ২জন, দূর্গাপুর ইউনিয়নে ৮জন, সুলতানাবাদ ইউনিয়নে ৬জন, ফতেপুর পূর্ব ইউনিয়নে ১৪জন, ফতেপুর পশ্চিম ইউনিয়নে ১ জন, গজরা ইউনিয়নে ৬জন, ফরাজীকান্দি ইউনিয়নে ১১জন, জহিরাবাদ ইউনিয়নে ৭জন, এখলাছপুর ইউনিয়নে ৬জন, মোহনপুর ইউনিয়নে ৫জন জীবন বৃত্তান্ত জমা দেন।

আগামী মাসে হতে যাওয়ায় তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলের মনোনয়ন পেতে মরিয়া ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের স্থানীয় নেতারা। অন্য ধাপের তুলনায় মনোনয়ন চাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। এবার গড়ে প্রতি ইউপিতে মনোনয়নের জন্য দলের কাছে আবেদন করেছেন দশজনেরও বেশি। প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপি মাঠে না থাকায় আওয়ামী লীগের নির্বাচন প্রতীক নৌকা পেলেই জনপ্রতিনিধি হওয়া যাবে, এমন ভাবনা থেকে দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সংখ্যা বাড়ছে। দলের কয়েকজন নেতা এমনই মনে করছেন।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ইউপি চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে মনোনয়ন ফরম জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই ৪ নভেম্বর এবং প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১১ নভেম্বর। ভোটগ্রহণ হবে ২৮ নভেম্বর।

জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক আইনজীবি রুহুল আমিন সরকার মনে করেন, দেশের পুরনো দল হিসেবে তৃণমূল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের বিশাল কর্মী-সমর্থক বাহিনী রয়েছে। এ ছাড়া টানা তিন মেয়াদ দল ক্ষমতায় থাকায় দেশের আপামর জনগণের মতো নেতাকর্মীদেরও ভাগ্যের উন্নয়ন হয়েছে। আর্থিক সামর্থ্য বাড়ায় তাঁদের নির্বাচনের প্রতি আগ্রহও বেড়েছে। এ ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করায় ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ধারণা তৈরি হয়েছে যে নৌকা পেলেই জনপ্রতিনিধি হওয়া যায়। ফলে নৌকা প্রতীক পাওয়ার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা বেড়েছে।

ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়ার অন্যতম সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মিয়া মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বিরোধী দল নির্বাচনে এলে হয়তো এমন চিত্র হতো না। সব দলের অংশগ্রহণে একটি সুন্দর নির্বাচন হলে জনগণ ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার আগ্রহ বেশি পেত, নির্বাচনে জনমতের প্রতিফলন ঘটার সুযোগ বাড়ত। তখন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের প্রার্থী হওয়ার হারও কমে যেত।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএ কুদ্দুস বলেন, বড় দল হিসেবে প্রার্থী বেশি থাকাটা স্বাভাবিক। প্রতিটি ইউনিয়নেই আমাদের অনেক যোগ্য নেতা রয়েছেন। তাঁদের অনেকেই জনপ্রতিনিধি হতে চান।

তিনি আরো বলেন, প্রার্থী বাছাইয়ে সৎ এবং জনপ্রিয় ব্যক্তিদের সুপারিশ করা হবে। আগামী নির্বাচন যাতে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হয় এ জন্য সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Loading

শেয়ার করুন: