মতলব উত্তরে কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দি

মতলব উত্তর প্রতিবেদক :

গত দুই দিনের অতি বৃষ্টির কারণে মতলব উত্তর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় হাঁটু পানিতে ডুবে গেছে সড়ক। অলিগলি-ঘরবাড়িতে ঢুকে পড়েছে পানি। সড়কে আটকা পড়েছে যানবাহন। চলাচল করতে গিয়ে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন মানুষ। টানা বৃষ্টিতে দীর্ঘদিনের সমস্যা জলাবদ্ধতায় ফের ভোগান্তিতে পড়েছেন মতলব উত্তর উপজেলার মানুষ ।

গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার রাতে মতলব উত্তর উপজেলায় বৃষ্টিপাত শুরু হয়। বৃষ্টির পানিতে মতলব উত্তর উপজেলার বিভিন্ন বিলের ফসলি জমি, মৎস্য প্রজেক্ট, বনায়ন প্রকল্প, ঘরবাড়ি’সহ বিভিন্নস্থান হাঁটু পানিতে তলিয়ে যায়। রাস্তায় পানি ওঠার কারণে শত শত পরিবার পানিতে আটকা পড়ে। বিভিন্ন এলাকায় মানুষের চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

গত দুদিনের অতি বৃষ্টির কারণে উপজেলার নি¤œ এলাকাগুলোতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। তবে বেশিক্ষণ পানি না থাকার জন্য দ্রুত আশপাশের নালা-খালগুলো পরিষ্কার করে ফেলার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। মানুষের ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করছে।

মতলব উত্তর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বিলগুলোতে সদ্য রোপা আমন ও বীজতলা পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। পানি অপসারণের কোনো পথ না থাকায় বৃষ্টির পানি বাড়িঘরে উঠতে শুরু করেছে। মতলব উত্তর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া খালগুলো বন্ধ থাকায় পানি টানতে পারছে না। প্লাবিত এলাকার কাঁচা ঘরবাড়ি ধসে পড়েছে।

অতিবৃষ্টির ফলে ঘনিয়ারপাড়, ওঠারচর, পাঁচআনী, মাথাভাঙা, হানিরপাড়, লতরদি, নাউরী, আমিয়াপুর, সাদুল্লাপুর, দুর্গাপুর গ্রামের বিলসহ কমপক্ষে ৪০টি বিল ডুবে গেছে। এসব বিলের মাছের ঘের ভেসে পানিতে একাকার হয়ে গেছে। মেঘনা নদী তীরবর্তী এই বিলগুলির পানি নদীতে নিষ্কাশন হতে পারছে না। গ্রামাঞ্চলের সব পুকুর পানিতে তলিয়ে গেছে। বেরিয়ে গেছে কোটি কোটি টাকার মাছ। সবজি ক্ষেতগুলি ভাসছে পানিতে। মানুষের যাতায়াতও ভোগান্তি বৃদ্ধি পেয়েছে।
বৃষ্টির পানিতে সয়লাব হয়ে গেছে সেখানে প্রধান রাস্তার ওপর দিয়েও পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এসব এলাকার মাছের ঘেরও তলিয়ে গেছে।

মতলব উত্তর উপজেলার পাঁচআনীর রুবেল জানান, অতিবৃষ্টির কারণে ভেসে গেছে মাছের ছোট বড় ঘের ও পুকুর। তলিয়ে গেছে বীজতলাসহ অনান্য ফসল। ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে স্থানীয় কৃষকরা।

মতলব উত্তর প্রেসক্লাবের সভাপতি বোরহান উদ্দিন ডালিম বলেন, মতলব উত্তর উপজেলার অধিকাংশ নিচু এলাকা এখনো পানির নিচে। যত্রতত্র খালে নেট, বেড়া দেওয়া ও অপরিকিল্পিত ঘরবাড়ি নির্মাণ করা ও সরকারি খালগুলো দখলের ফলে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। ফলে সামান্য বৃষ্টিতে তাদের এলাকা তলিয়ে যায়।

স্থানীয়রা জানান, গত দুদিনে যে ব্যাপক বৃষ্টি হয়েছে তাতে চারিদিকে পানি থৈ-থৈ করছে। চারিদিক আটকানো, পানি বের হওয়ার সুযোগ নেই। মানুষকে এই ডুবন্ত অবস্থা থেকে উদ্ধারের কোন ব্যবস্থা নেই। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে উপজেলার হাজারও পরিবার ।

মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী অফিসার গাজী শরীফুল হাসান জানান, আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশ দিয়েছি বৃষ্টির কারণে তলিয়ে যাওয়া এলাকার পানি দ্রুত নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য।

মেঘনা ধনাগোদা পানি ফেডারেশন কমিটির সাধারণ সম্পাদক সরকার আলাউদ্দিন বলেন, আমরা চেষ্টা করছি পানি দ্রুত নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে। অপরিকল্পিত বাড়িঘর নির্মাণ ও কিছু লোকজন কর্তৃক সরকারি খাল ও ক্যানেল দখল করে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করার কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে।

Loading

শেয়ার করুন: