মনিরা আক্তার মনি:
মতলব উত্তর উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবস উপলক্ষে ভার্চুয়াল সভা সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্নেহাশিস দাশের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মতলব উত্তর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ কুদ্দুস।
এসময় বক্তব্য রাখেন মতলব উত্তর উপজেলার সহকারী কমিশনার ( ভূমি) হাবিবা আফরোজ শাপলা, মতলব উত্তর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শাহজাহান কামাল, উপজেলা প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম, সমবায় কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন, সমাজসেবা কর্মকর্তা আনিছুর রহমান, মতলব উত্তর প্রেসক্লাবের সভাপতি বোরহান উদ্দিন ডালিম সহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাগন।
বক্তারা বলেন, আমাদের জাতীয় ইতিহাসের শ্রেষ্ঠতম অধ্যায় হলো একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ। স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন ইতিহাসের মহানায়ক। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি মুক্তিযুদ্ধের জন্য জাগ্রত হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে এসে পাকিস্তান বাহিনী যখন বুঝতে শুরু করে যে তাদের পক্ষে যুদ্ধে জেতা সম্ভব না, তখন তারা নবগঠিত দেশকে সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও শিক্ষাগত দিক থেকে দূর্বল এবং পঙ্গু করে দেওয়ার জন্য পরিকল্পনা করতে থাকে। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৪ ডিসেম্বর রাতে পাকিস্তানী বাহিনী তাদের দেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর ও আল শামস বাহিনীর সহায়তায় দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নিজ নিজ গৃহ হতে তুলে এনে নির্মম নির্যাতনের পর হত্যা করে। এরপর ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতা লাভের মধ্য দিয়ে যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে। পৃথিবীর মানচিত্রে জন্ম নেয় বাংলাদেশ নামের নতুন একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ। তাই ত্রিশ লক্ষ শহীদের বিনিময়ে পাওয়া মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংগ্রহ করতে হবে। আমাদের বিবেককে জাগ্রত করতে হবে কেননা দেশকে উন্নয়নের দায়িত্ব আমাদের সকলের।
একাত্তরে বুদ্ধিজীবীসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষকে যে নৃশংসতায় হত্যা করা হয়েছে পৃথিবীর ইতিহাসে তার তুলনা মেলা কঠিন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধেও ভয়াবহ গণহত্যা হয়েছে, তবে তা ছিল ছয় বছরব্যাপী একাধিক মহাদেশে চলমান যুদ্ধে পরিচালিত গণহত্যা আর বাংলাদেশে নয় মাসে মাত্র ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল এলাকাজুড়ে যে গণহত্যা চালানো হয়েছে তা নজিরবিহীন। অতিসম্প্রতি আমরা জাতীয় গণহত্যা দিবস পালন শুরু করলেও একাত্তরের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে এখনও সক্ষম হইনি।