মতলব উত্তরে শৌখিন বৃক্ষপ্রেমিক মফিজ নার্সারি ব্যবসায় সফল

মতলব উত্তর প্রতিবেদক :

নার্সারি করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার শৌখিন বৃক্ষপ্রেমিক মফিজুল ইসলাম।উপজেলা শহরে থানাসংলগ্ন পালালোকদি গ্রামে ২ একর জমিতে তিনি গড়ে তুলেছেন ৩০০ দেশি-বিদেশি গাছের বিশাল ভান্ডার। তবে থেমে নেই জাতসংগ্রহ। সংগ্রহে নেই এমন কোনো গাছের নাম শুনলেই তিনি ছুটে যানসংগ্রহ করে আনেন চারা।

মফিজুল ইসলাম একসময় কৃষি কাজ করতেন। ১৯৮৯ সালে চাকরিতে থাকাকালীন বাড়ির আশপাশে অল্প পরিসরে গাছের চারা সংগ্রহ করে ছোট পরিসরে নার্সারি শুরু করেন তিনি। প্রতিবছরই নার্সারির আকার বড় করেন। নাম দেন বনফুল নার্সারি। এখন বাণিজ্যিকভাবে সফলতাও পাচ্ছেন তিনি।

মফিজুল ইসলাম জানান,গত কয়েক বছরের ব্যবধানে পুরো মতলব উত্তর উপজেলায় তিনি ব্যাপক সাড়া পেয়েছেন। বিভিন্ন কৃষি ও প্রযুক্তি মেলায় তিনি নিয়মিতই স্টল নিয়ে হাজির হন। মেলার প্রদর্শনীগুলোতে অংশ নিয়ে সেরা হওয়ার পুরস্কারও জিতে নিয়েছেন কয়েকবার। বর্তমানে তাঁর নার্সারিতে পাঁচজন শ্রমিক কাজ করেন।

মফিজুল ইসলামের নার্সারিতে আম বারি-৪, কাটিমন, সুবর্ণরেখা,আম্রপালিসহ প্রায় ৫০ জাতের দেশি-বিদেশি আমের চারা রয়েছে। এ ছাড়া চায়না-৩ লিচু, বেদানা লিচু, মুম্বাই লিচু, জাম, ভিয়েতনামি কাঁঠাল,পেয়ারা,রাম্বুটান,সাতকরা থাই পেয়ারা,লটকন, আমলকি, কদবেল, পেঁপে, সফেদা, ভিয়েতনামি নারিকেল,জামরুল,থাই মিষ্টি তেঁতুল,বেদেনা,ডালিম, আপেল, সাদা আপেল, কমলা,নাশপাতি,বেল,চালতা,আমড়া, ড্রাগন ফল,আক্সগুর, মিষ্টি জলপাই, করমচা, বুবি,চায়না কমলা,কাশ্মীরি কুল,বাউকুলসহ প্রায় শতাধিক দেশি-বিদেশি ফলের চারা রয়েছে।

অপর দিকে শোভাবর্ধনকারী গোলাপ, মুসেন্দা, রঙ্গন, বেলি, চার ধরনের জবা, জুঁই, গন্ধরাজ, হাসনাহেনা, বাগানবিলাস, সাদা জিনিয়া, কসমস, সূর্যমুখী, পাতাবাহার, কৃষ্ণচূড়া, মাধবীলতা, ক্রিসমাস ট্রি, ফিজিয়াম, ডালিয়া, নয়নতারাসহ প্রায় ১০০ দেশি-বিদেশি ফুলের চারা পাওয়া যায়।
এ ছাড়া বারোমাসী শজনে, এলাচি, দারুচিনি, লবঙ্গ, তেজপাতা, গোলমরিচ, লোভেরা, শতমূলী, তুলসীসহ বিভিন্ন মসলা, ঔষধি গাছ, কাঠের গাছ, সবজির চারা পাওয়া যায়।

মতলব উত্তর প্রেসক্লাবের সভাপতি বোরহান উদ্দিন ডালিম জানান, তিনি কয়েকবার মফিজুল ইসলামের নার্সারিতে ঘুরতে গেছেন। অজপাড়াগাঁয়ে একটি নার্সারিতে এভাবে ফুল, ফলদ, সবজি, ঔষধি চারার ব্যাপক সংগ্রহ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় উদ্যোগ।

তিনি বলেন, গাছ লাগানোটা হতে পারে আমাদের সামাজিক বন্ধন ও সুস্থ বিনোদনের উৎস। তা ছাড়া পরিবর্তিত জলবায়ুর বিরূপ প্রতিক্রিয়া থেকে বাঁচতে বৃক্ষ রোপণের বিকল্প নেই।
তাঁর পরামর্শ দেশের বিশাল জনগোষ্ঠীর পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তায় বাড়ির ছাদে, টবে অথবা বাড়ির আশপাশের পতিত জমি ফেলে না রেখে সবজি, ফলদ ও ঔষধি গাছ লাগানোর।

মতলব উত্তর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, মফিজুল ইসলাম একজন বৃক্ষপ্রেমী মানুষ। তিনি দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা সংগ্রহ করেন। প্রতিবছর তিনি উপজেলায় বিভিন্ন কৃষি ও প্রযুক্তি মেলায় অংশগ্রহণ করেন এবং পুরস্কার জেতেন। নার্সারিকে আরও সমৃদ্ধ করতে তাঁকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

Loading

শেয়ার করুন: