স্পীডবোট চুরির ঘটনায় জহিরাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান’সহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক :

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার জহিরাবাদ এলাকায় মেঘনা নদী থেকে গত ২৪ জুলাই বিকালে মেসার্স মেহেরিমা এন্টারপ্রাইজ নামে একটি স্পীড বোট নিয়ে যায় দুর্বিত্তরা। ওই স্পীড বোটটি আত্মসাৎ করার লক্ষ্যে অতর্কিত হামলা দিয়ে জোরপূর্বক নিয়ে যায় বলে দাবী করেছেন মালিক মোহনপুর গ্রামের আবদুল মতিন কাজী।

এ ঘটনায় মতিন কাজী বাদী হয়ে রোববার (২৫ জুলাই) মতলব উত্তর থানায় পেনাল কোড ১৮৬০ এর ১৪৩, ১১৪, ৪২৭, ৪৩৯, ও ৫০২ (২) ধারায় মামলা দায়ের করেছেন। এতে ১নং বিবাদী করা হয়েছে মতলব উত্তরের জহিরাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম গাজী (৪০)কে। বাকীরা বিবাদীরা হলেন, জহিরাবাদ গ্রামের সোহেল গাজী, সম্রাট গাজী, কাজল মেম্বার, শফিক, আলী আহম্মদ, জয়পুরা গ্রামের রশিদ খান, ঠাকুরপাড়ার মুকুল প্রধান, মুক্তিরপল্লী আনা দেওয়ান, কামারিকান্দির দুলাল দেওয়ান, চর মহিষমারীর হানিফ মুন্সি, বালুচর গ্রারে গাজী নাজমুল। এছাড়াও আরো অজ্ঞাতনামা ৩০/৩৫ জনকে বিবাদী করা হয়েছে মামলায়।

এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ জুলাই আবদুল মতিন কাজী তার নিজস্ব স্পীডবোট যোগে ড্রেজিং প্রকল্পের সাইটে যান। ওখানে নষ্ট হওয়া ড্রেজারের সাথে স্পীডবোটটি (রেজিঃ নং এম-০১-৩০১৮) বেঁধে রেখে ড্রেজারের ভিতরে কাজ করতে থাকেন। এই সুযোগে বিকাল সাড়ে চারটার সময় জহিরাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম গাজীর উপস্থিতি ও হুকুমে উল্লেখিত বিবাদীরা ও তার দলবল’সহ দেশীয় অস্ত্রসন্ত্র নিয়ে ড্রেজারের গ্লাস ভাংচুর করে প্রায় ৭০ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করে। প্রায় ১৫/২০ ধরে তান্ডব চালিয়ে আত্মসাৎ করার লক্ষ্যে ইঞ্জিন চালিত ট্রলারের সাথে বেঁধে ৯ লাখ টাকা মূল্যে স্পীডবোটটি নিয়ে সেলিম গাজীর নেতৃত্বে ডাঙ্গায় উঠিয়ে গোপন করে রাখে।

বাদী আবদুল মতিন কাজী বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জেড়ে আমার স্পীডবোটটি গাজী মুক্তারের ভাই চেয়ারম্যান সেলিম গাজী অতর্কিত হামলা চালিয়ে জোড়পূর্বকভাবে নিয়ে যায়। কিন্তু আমার স্পীডবোটটি সে আত্মসাৎ করতে পারেনি। পুলিশ খবর পেয়ে তার বাড়ির সামনে অভিযান চালিয়ে স্পীডবোটটি পেয়েছে। আমি মামলা করেছি, আইনগত ভাবে পুলিশ স্পীডবোট উদ্ধার করবে।

মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা মোহনপুর নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পুলিশ পরিদর্শক) অহিদ উল্লাহ বলেন, মামলার তদন্তভার পেয়েছি। সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সহযোগীতা নিয়ে স্পীডবোটটি উদ্ধার করা হবে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গত ২৫ জুলাই রাতে আমরা খবর পেয়ে জহিরাবাদ গিয়ে স্পীডবোটটির সন্ধান পেয়েছি। ওই সময় সহকারি পুলিশ সুপার ও মতলব উত্তর থানার ওসি উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু তখন বোটটি উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
মতলব উত্তর থানার ওসি মুহাম্মদ শাহজাহান কামাল বলেন, স্পীডবোট নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় বিরোধ সৃষ্টি হওয়ার আশংকায় ঘটনাস্থলে যাই। জহিরাবাদে গিয়ে স্পীডবোটের সন্ধান পেয়েছি। পরে স্পীড বোটটি থানা পুলিশ জব্দ করতে চাইলে সেলিম চেয়ারম্যান ও স্থানীয় জনগণ দেয়নি। স্পীড বোট না পেয়ে মালিক মতিন কাজী থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মোহনপুর নৌপুলিশ মামলা তদন্ত করবে এবং স্পীডবোটটি উদ্ধার করবে। আমাদের সহযোগীতা চাইলে থানা পুলিশ’সহ ঘটনাস্থলে যাবো। মামলা হওয়ার পর সেলিম চেয়ারম্যান থানায় লোক পাঠিয়েছেন জিডি করার জন্য, কিন্তু মামলার পর জিডি হয় না।

এদিকে জহিরাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম গাজী বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বলেছেন, মেঘনা নদীতে ডাকাতি হওয়ার সময় জনগণ স্পীডবোটটি উদ্ধার করে ডাঙ্গায় উঠিয়ে রেখেছে। কেউ স্পীডবোটটি চুরি বা আত্মসাৎ করেনি। তবে গত কয়েকদিনের মধ্যে নদীতে ডাকাতির কোন ঘটনা ঘটেনি বলে জানায় নৌপুলিশ।

Loading

শেয়ার করুন: