হাজীগঞ্জে জেএসসি-জেডিসি দেয়া হচ্ছে না রাকিব-রাব্বির

নিজস্ব প্রতিবেদক:

২০১৯ সালের জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা দেয়া হচ্ছে না চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের রাকিব ও রাব্বি নামের দুই শিক্ষার্থীর।

রাকিব হোসেন হাজীগঞ্জ উপজেলার রামচন্দ্রপুর ফাযিল মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। সে উপজেলার ৭নং বড়কুল ইউনিয়নের ঝাকনী গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে।

আর রাব্বি উপজেলার টঙ্গিরপাড় উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। সে উপজেলার ৮নং হাটিলা টঙ্গীরপাড় ইউনিয়নের হাটিলা গ্রামের বাচ্চু মিয়ার ছেলে।

রাকিব হোসেন কান্না জড়িত কণ্ঠে বলে, ‘আমি ফরম ফিলাপের জন্য বরকত উল্লাহ স্যারের কাছে একশ’টাকা দিয়েছিলাম। এখন স্যার বলছে আমার নাকি ফরম ফিলাপ হয়নি। আমি মূল্যায়ন পরীক্ষা দিয়েছি। বিদায়ের চাঁদা দিয়েছি। যারা স্কুলে নিয়মিত আসেনি, তারা পরীক্ষা দেবে। অথচ আমি পরীক্ষা দিতে পারবো না।’

জানতে চাইলে মাদ্রাসার শিক্ষক মোহম্মদ বরকত উল্লাহ বলেন, ‘রাকিব আমার কাছে কোন টাকা দেয়নি। সে ফরম ফিলাপ করেনি। তাই প্রবেশপত্র আসেনি।’

মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সফিকুর রহমান বলেন, ‘রাকিব ওই সময় অসুস্থ ছিল। তাই সে ফরম ফিলাপ করতে আসেনি। শিক্ষকের কাছে কোন টাকাও দেয়নি।’

অন্যদিকে রাব্বি জানায়, তার টঙ্গীরপাড় উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবারের জেএসসি পরীক্ষায় ২২৯ জন অংশগ্রহণ করছে। সে মূল্যায়ন পরীক্ষা, বিদায়ের চাঁদা এবং এমনকি প্রবেশপত্রের জন্য ৪০০ টাকা দিলেও এখন শিক্ষকরা বলছেন তার প্রবেশপত্র আসেনি।

শিক্ষার্থী মো. রাব্বি বলে, ফরম ফিলাপের সময় প্রধান শিক্ষকের সামনে আমি ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি রাসেল মজুমদার কাকার কাছে ১ হাজার ৮০০ টাকা দিয়েছি। এখন শুনতেছি আমার ফরম ফিলাপ হয়নি।

জানতে চাইলে রাসেল মজুমদার বলেন, ‘রাব্বি আমার ভাতিজা। আমি একসঙ্গে ৫ জনের ফরম ফিলাপ করেছি। তাদের মধ্যে রাব্বি একজন। প্রধান শিক্ষকের কাছে টাকাগুলো পৃথক পৃথকভাবে দিয়েছি। শিক্ষকদের গাফিলতিতে রাব্বীর প্রবেশপত্র আসেনি। এই দায় প্রধান শিক্ষকের।’

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘রাব্বির ফরম ফিলাপের টাকা জমা হয়নি। তাই প্রবেশপত্র আসেনি। এখন আমাদের কিছু করার নেই।’

হাজীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘শনিবার (২ নভেম্বর) জিএসসি পরীক্ষা শুরু হবে। যাদের প্রবেশপত্র আসেনি, এখন আর কিছুই করার নেই। দুই একদিন আগে হলে কুমিল্লা বোর্ডে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা করা যেত। এখন আর কিছুই করার নেই। তারপরও আমরা দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষককে শোকজ করবো।’

Loading

শেয়ার করুন: