অঙ্গীকার ও রক্তধারা সম্পর্কে জেলা প্রশাসকের বক্তব্য

দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ অবস্থায় ছিলো চাঁদপুর জেলার মুক্তিযুদ্ধের দুটি বিশেষ ভাস্কর্য “অঙ্গীকার” ও “রক্তধারা”। বিশেষ করে অঙ্গীকার। বিভিন্ন সময়ে মূল রং এর উপরে চুনকাম ও সাদা রং করে ভাস্কর্যটির ক্ষতি করা হয়েছিল।পলেস্তারা খসে পড়েছিলো, ছিলো না কোন নিরাপত্তা ব্যবস্থা, অবাধে গরু ছাগল বিচরণ করতো, অঙ্গীকারের দেওয়ালের গায়ে বিভিন্ন অপ্রীতিকর ও অশ্লীল কথা লেখা থাকতো। এই ভাস্কর্যটিতে কখনও চুনকাম কখনও সাদা রংয়ের প্রলেপ দেওয়ায় ভাস্কর্যটি হারিয়েছিলো স্বকীয়তা। এমতাবস্থায় জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অঞ্জনা খান মজলিশ জনপ্রতিনিধি সহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের অনুরোধে এই ভাস্কর্যটি সংস্কারের উদ্যোগ নেন।

জেলা প্রশাসক বিভাগীয় কমিশনার মহোদয়ের নিকট থেকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দুই লক্ষ টাকার একটি ফান্ড পান।তারপর এই কাজটি সম্পূর্ণ করার জন্য একটি কমিটি গঠিত করেন।

সেই কমিটির আহবায়ক ছিলেন চাঁদপুর কন্ঠের প্রধান সম্পাদক কাজী শাহাদাত,বিশিষ্ট ছড়াকার ডা.পীযুষ কান্তি বড়ুয়া ও জনাব মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান। কাজী শাহাদত ও ফরিদ হাসান ভাস্কর মোঃ আনিসুজ্জামানকে নিয়ে আসেন এবং জানান তিনি ভাস্কর সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদের ছাত্র। সেই শিল্পি যিনি ভাস্কর সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদের ছাএ তাঁর তত্ত্বাবধানে কমিটি এই সংস্কার কাজ সম্পাদন করেন।ভাস্কর জানান জানান বিভিন্ন সময়ে চুনকাম এবং রঙ দেওয়ার কারণে ভাস্কর্যের (অঙ্গীকার) গঠনবিন্যাস বিকৃত হয়ে গেছে যা আর সম্পূর্ণরুপে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয় বরং নিতে গেলে এর গঠনগত আরও ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তাই তিনি এটিকে সাদা রঙ করেন কারণ তিনি যখন কাজ ধরেন তখনও সেটি বিবর্ন সাদা রং এর ছিল। এভাবেই অঙ্গীকারকে পুনঃসংস্কার করা হয়।

বুধবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অঙ্গীকার,বঙ্গবন্ধু পার্ক বিষয়ে যারা মানববন্ধন করেন তারা জেলা প্রশাসকের সাথে সাক্ষাৎ করেন। জেলা প্রশাসক তাঁদের সাথে কথা বলেন এবং ভাস্কর্যগুলো সংস্কারের বিষয়ে তাঁদের সহযোগিতা চান এবং ভাস্কর্যগুলো সংস্কারে তাদেরকে প্রয়োজনে সব ধরনের সহযোগিতা করার কথা জানান।

এ বিষয়টি নিয়ে তারা ঢাকায় কথা বলে নিশ্চিত করেন যে তারা ভাস্কর্যটিকে (অঙ্গীকার) পুনরায় পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করবেন। এসময় জেলা প্রশাসক অভিনেতা, মঞ্চ নির্দেশক, নির্মাতা রামেন্দু মজুমদার ও নির্মাতা নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুর সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলেন। তাঁরাও জেলা প্রশাসককে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

ভাস্কর আব্দুল্লাহ খালিদের ছেলে সৈয়দ আবদুল্লাহ জহী তাঁর পিতার নামে নামফলক করায় জেলা প্রশাসকের প্রতি লিখিতভাবে কৃতজ্ঞতা জানান। সবাই একযোগে চাঁদপুরের ভাস্কর্যগুলো রক্ষার কাজে জেলা প্রশাসককে সহায়তা করবেন মর্মে জানান।

Loading

শেয়ার করুন: