চাঁদপুর বড়স্টেশন মোলহেডে অবৈধ দখলে থাকা ৫০ শতাংশ জমি উদ্ধার

চাঁদপুর বড় স্টেশন মোলহেড এলাকায় দীর্ঘ বছর ধরে দখলে থাকা বাংলাদেশ রেলওয়ের ৫০ শতক ভূমি উদ্ধার করা হয়েছে। চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশের নেতৃত্বে জেলা প্রশাসন ও চাঁদপুর পৌরসভা যৌথ উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে এই বিপুল পরিমাণ ভূমি উদ্ধার করেছে। দীর্ঘ বছর ধরে এই বিপুল পরিমাণ ভূমি জেলা জাকের পার্টির দখলে ছিলো। প্রকৃতির অপার সোন্দর্যমণ্ডিত ত্রিনদীর মোহনার এই পর্যটন এলাকাটিকে নান্দনিক করার লক্ষে এই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়।

এছাড়াও এই পর্যটন এলাকায় যানযট নিরসন এবং জনসাধারণের চলাচল নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে ১০টি অবৈধ স্থাপনা ও দোকানপাট সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
চাঁদপুর জেলা প্রশাসন ও চাঁদপুর পৌরসভার এ সাহসী উচ্ছেদ অভিযানের ফলে বর্তমানে মোলহেড এলাকার সোন্দর্য আরো একধাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। উদ্ধার করা ওই ভূমিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত দর্শনার্থীদের বসার জন্যে নান্দনিক ব্যাঞ্চ স্থাপনের কাজ চলছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চাঁদপুর জেলা প্রশাসন কর্তৃক ঘোষিত শহরের একমাত্র পর্যটন এলাকা বড়স্টেশন মোলহেডে রেলওয়ের প্রায় ৭০ শতক ভূমি অবৈধভাবে দলখ করে রেখেছিলো জেলা জাকের পার্টি। সেখানে তারা স্থায়ী স্থাপনার মাধ্যমে জলসাঘর তৈরী করেছিলো। প্রতি বছরে ঈদের নামাজকে ঘিরে এই স্থানে জাকের পার্টি তরীকার মানুষের মিলনমেলা হতো। তারা নামাজ আদায় শেষে একে অন্যের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিতো। তারও বহু বছর আগে মোলহেড এলাকাটি সাবের গাজীর আস্তানা হিসেবে মাজার ভক্তদের দখলে ছিলো। তখন সেরাবাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা চলাকালে সেই আস্তানাটি পুরোপুরি ভেঙে দেয়। মূলত এর পর থেকেই এই স্থানটির সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেতে শুরু করে।

এদিকে দেশ-বিদেশে সুপরিচিতি পাওয়ার চাঁদপুরের এই তিন নদীর মোহনাকে আরো নান্দনিক করার জন্যে আগত দর্শনার্থীদের পক্ষ থেকে বহুকাল ধরেই দাবী উঠে আসছিলো। গত ১৮ ও ১৯ মে দুই দিন চাঁদপুর জেলা প্রশাসন ও চাঁদপুর পৌরসভা যৌথ উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে ৫০ শতক ভূমি উদ্ধার করে।

এ বিষয়ে চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মােহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান বলেন, চাঁদপুর বড়স্টেশন মোলহেড এলাকা সারাদেশেই সুপরিচিত। এখানে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটকরা বেড়াতে আসেন। তারা এসে যেন এ এলাকার মনােরম পরিবেশ ও সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারে তার জন্যেই এ এলাকার সৌন্দর্য বৃদ্ধি এবং নান্দনিক করতে কাজ শুরু হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, এখানে বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রায় ৭০ শতক ভূমি অবৈধ দখলে ছিলো। কিন্তু এ বিষয়ে তাদের কাছে রেলওয়ের কোন অনুমতি পত্র কিংবা কাগজপত্র নেই।তাই মোলহেডের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে এই অবৈধস্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। এতে মোলহেডের ৫০ শতক ভূমি উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি প্রায় ২০ শতক ভূমিতে জাকের পার্টির একটি নামাজের স্থান রয়েছে। এ জন্যে সেটিতে হাত দেয়া হয়নি। উদ্ধার হওয়া ভূমিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত দর্শনার্থীদের বসার জন্যে নান্দনিক ব্যাঞ্চ স্থাপনের কাজ চলছে।

মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান আরো বলেন,আমরা এএলাকার যানযট নিরসনের জন্যে কয়েকটি রাস্তা নির্ধারন করছি। আর ওই রাস্তা বের করতে কিছু অবৈধ স্থাপনা ছিলো,তা সরিয়ে দিয়েছি। এভাবেই ধীরে ধীরে এই মোলহেডের সোন্দর্য বৃদ্ধি করা হবে এবং এর নান্দনিকতা ফুটিয়ে তোলা হবে।

Loading

শেয়ার করুন: