চাঁদপুর সদর ও হাইমচরে ৩৩ হাজার পরিবারে দুর্ভোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

চাঁদপুর সদর ও হাইমচরসহ চারটি উপজেলায় মেঘনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদী তীরবর্তী ১৬টি ইউনিয়নের প্রায় ৩৩ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। কয়েকদিন জোয়ারের পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় চাঁদপুর সদর ও হাইমচরে বসতবাড়ি, মৎস্য খামার, ফসল ও সড়কের ক্ষতি হয়েছে অধিক হারে। উপজেলা প্রশাসন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

রোববার সকালে মেঘনায় জোয়ারের পানি কম থাকলেও শুক্রবার মেঘনার পানি বিপদসীমার ৮১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। গত দুদিন ধরে চাঁদপুরে থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বৃষ্টির কারণে মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাত্রা অনেকটা ব্যহত হচ্ছে। ব্যবসা-বাণিজ্য ও যানবাহন চলাচল আগের চাইতে কমছিলো।
জোয়ারের পানিতে চাঁদপুর শহরের বঙ্গবন্ধু সড়ক, রহমতপুর আবাসিক এলাকা, নাজির পাড়াসহ নিম্ন এলাকাগুলোর সড়কের অবস্থা খুবই করুন।

চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা জানান, জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চাঁদপুর সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর, হানারচর, ইব্রাহীমপুর, চান্দ্রা, লক্ষ্মীপুর মডেল, তরপুরচন্ডী, বালিয়া, বিষ্ণুপুর ও কল্যাণপুর ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তবে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে চরাঞ্চলের লোকজন। বাকী ইউনিয়নগুলোর কিছু কিছু এলাকায় জোয়ারের পানি প্রবেশ করে লোকজন ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারদের মাঝে বিভিন্নভাবে সহায়তা করা হচ্ছে।

হাইমচর উপজেলার মেঘনার পূর্ব পাড়ের নদী তীরবর্তী এলাকায় জোয়ারের পানিতে ফসল, সড়ক ও বসতবাড়ি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ব্যাপক হারে। অনেক স্থানে পাকা সড়ক ভেঙে খালে পরিণত হয়েছে। সাধারণ মানুষ ওইসব খাল পার হওয়ার জন্য অস্থায়ীভাবে সাঁকো দিয়ে পার হচ্ছেন। বিশেষ করে হাইমচর উপজেলার পানের বরোজগুলো গত মাসের জোয়ারের পানি এবং বর্তমান জোয়ারের পানিতে লোকসানের মুখে পড়েছে।
হাইমচর উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা (পিআইও) জানান, এ পর্যন্ত জনপ্রতিনিধিদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের ২০ হাজারেরও বেশী পরিবার জোয়ারের পানিতে অস্থায়ী বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। তবে পূর্ণাঙ্গ তথ্য আসলে এই সংখ্যা আরো বেশী হতে পারে।

হাইমচর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুর হোসেন পাটওয়ারী বলেন, জোয়ারের পানিতে ৬টি ইউনিয়নের লোকজনই ক্ষতিগ্রস্থ। তবে চরাঞ্চলের লোকজন অস্থায়ী বন্যার মধ্যেই রয়েছেন। হিসাবমতে উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের ৬১টি ওয়ার্ডের লোকজন জোয়ারের পানিতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। বাকী ১১টি ওয়ার্ড আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ।
চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তারা জানান, মেঘনার পানি দু’একদিনের মধ্যে কমার সম্ভাবনা রয়েছে। সকালের জোয়ারের পানি কম থাকলেও রাতের জোয়ারে পানি বৃদ্ধি পায়। ঠিক তখনই নদী উপকূলীয় এলাকায় পানি প্রবেশ করে।

Loading

শেয়ার করুন: