তদন্ত কমিটি আমার কাছে আসেনি,বক্তব্যও নেননি অভিযোগ নবজাতকের মা তামান্নার

মতলব উত্তর ব্যুরো :

মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর পালস্ এইড জেনারেল হাসপাতাল এন্ড ডায়াগষ্টিক সেন্টারে সিজারিয়ানের টাকা পরিশোধের চাপেই নবজাতক বিক্রি করেন মা তামান্না বেগম। এমনটাই অভিযোগ করেন তিনি। ১৩ ফেব্রুয়ারী রবিবার সকালে নবজাতক আব্রাহার মা তামান্না বেগমের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, তদন্ত কমিটি আমার কাছে আসেনি, আমার বক্তব্যও নেয়নি। তদন্ত কমিটির রিপোর্টে বলছে আমি নাকি মানষিকভাবে বিপর্য়য় ছিলাম। আসলে আমি কখনোই মানসিক ভাবে বিপর্যয় হয়ে পরিনি। টাকা পরিশোধ করতে না পাড়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাকে চাপ প্রয়োগ করেছে। এমনকি টাকা পরিশোধ না করায় আমাকে রিলিজ পর্যন্ত করা হয়নি। কোন উপায় না পেয়েই আমি নবজাতককে বিক্রির সিদ্ধান্ত নেই।

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. হাসিবুল ইসলাম, সদস্য ডা. জয়নাল আবেদিন ও ডা. মাজাহারুল ইসলাম ৮ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার নিকট তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দাখিল করেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে পারিবারিক সমস্যা ও অর্থনৈতিক টানাপড়েনের কারণে নবজাতক বিক্রি করেছিলেন তামান্না বেগম। হাসপাতালের বিল পরিশোধের সত্যতা পাননি তারা। পালস এইড জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের এতো সম্পৃক্ততা ছিল না।

তদন্ত কমিটির এই রিপোর্ট জানার পর তামান্না বেগম বলেন, কেউ নিজের সন্তান অল্প দুঃখে বিক্রি করতে চায়না। পাইলস এইড হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কর্তৃপক্ষ আমাকে বিল পরিশোধ করার জন্য অনেক চাপ দিয়েছে। আমার কাছ থেকে ১টি টাকাও কম রাখেনি, রিলিজও করেনি। তাই বাধ্য হয়েছি সন্তান বিক্রির জন্য।

জানা যায়, রিলিজের সময় হাসপাতালে বিল আসে ২৬ হাজার টাকা। ওই টাকা পরিশোধ করতে না পাড়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ টাকার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। এ অবস্থায় ছেংগারচর বাজারের কাউসার নামে এক ব্যবসায়ীর মাধ্যমে এক নিঃসন্তান দম্পতির কাছে মাত্র ৫০ হাজার টাকায় ওই সন্তানকে বিক্রি করে হাসপাতালের বিল পরিশোধ করেন তামান্না।

এবিষয়ে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ডা. হাসিবুল ইসলামকে ফোন দিলে তা রিসিভ করেননি।

মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (দায়িত্ব) ডা. নুসরাত জাহান মিথেন বলেন, আমি কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে নবজাতক বিক্রির সাথে পালস এইড হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার জড়িত ছিলনা। এমনটাই উঠেছে তদন্ত কমিটির রিপোর্টে।

৪ ফেব্রুয়ারি সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. হেদায়েত উল্লাহ ও স্থানীয় থানা পুলিশের সহযোগিতায় মতলব উত্তরের ষাটনল এলাকা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। ফিরিয়ে দেওয়া হয় মায়ের কোলে।

উল্লেখ্য, উপজেলার কলাকান্দা ইউনিয়নের হানিরপাড় গ্রামের দিনমজুর মো. আলমের স্ত্রী তামান্না বেগমের (২৮) প্রসব বেদনা উঠলে তিনি গত ২৬ জানুয়ারি ছেংগারচর পালস্ এইড হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে পুত্রসন্তান জন্ম দেন । ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি থাকেন তিনি।

Loading

শেয়ার করুন: