দেশের প্রথম ভার্চুয়াল জব ফেস্টে ৬ শতাধিক প্রার্থীর কর্মসংস্থান চূড়ান্ত

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি:

দেশের শীর্ষস্থানীয় চাকরির পোর্টাল স্কিল ডট জবস ও বাংলাদেশ সোসাইটি ফর হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট (বিএসএইচআরএম) ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ক্যারিয়ার ডেভেলাপমেন্ট সেন্টারের যৌথ আয়োজনে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত ‘ভার্চুয়াল জব ফেস্ট-২০২০’ এ ৬ শতাধিক প্রার্থীর কর্মসংস্থান চূড়ান্ত হলো এবং একইসঙ্গে আরো পাঁচ শতাধিক প্রার্থীর কর্মসংস্থান প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। মেধাভিত্তিক কাজ ঘরে বসে করা সম্ভব এই বিশ্বাসকে পুঁজি করে এবং যারা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করে চাকরির অপেক্ষায় ছিলেন বা যারা করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে স্বপ্নের চাকরিটি হারিয়েছেন মূলতঃ তাদের জন্য স্কিল ডট জবস বিএসএইচআরএম এ ফেস্টের আয়োজন করে। এ আয়োজনে সহযোগী হিসেবে ছিল বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস), বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অফ সফটওয়্যার ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) ও বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অফ কল সেন্টার এন্ড আউট সোসিং (বাক্কো)

শনিবার (১১ জুলাই) স্কিল জবসের ফেসবুক পেজে মাসব্যাপী আয়োজিত এ ‘ভার্চুয়াল জব ফেস্ট-২০২০’ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্কিল জবস্ ও ড্যাফোডিল পরিবারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নূরুজ্জামান, বিএসএইচআরএম এর প্রেসিডেন্ট মাশেকুর রহমান খান, বেসিস এর সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবির, বিসিএস এর সভাপতি মোঃ শহীদুল মুনীর,বাক্কো’র সভাপতি ওয়াহিদুর রহমান শরীফ ও সেক্রেটারী জেনারেল তওহীদ হোসেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ভার্চুয়াল জব ফেস্টের আহ্বায়ক ও বিএসডিআই এর নির্বাহী পরিচালক কে এম হাসান রিপন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার বলেন. আমরা এক পরিবর্তীত দুনিয়ার মুখোমুখি দাঁিড়য়ে আছি। সামনের দুনিয়া আরও বদলে যাবে। সেই বদলে যাওয়ার দুনিয়ার জন্য এখনই নিজেদেরকে প্রস্তুত করতে হবে। সেজন্য যে কাজগুলো করা দরকার তা ড্যাফোডিলের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো ইতিমধ্যে শুরু করে দিয়েছে। এটা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। এ সময় তিনি স্কিল ডট জবসকে ধন্যবাদ জানান ভার্চুয়াল জব ফেস্ট আয়োজন করার জন্য।

মোস্তাফা জব্বার আরও বলেন, পৃথিবীতে তিনটি শিল্প বিপ্লব ঘটে গেছে। সেসব বিপ্লবের অংশীদার তখন আমরা খুব একটা হতে পারিনি। এখন চলছে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব। এই বিপ্লব যেন আমরা মিস না করি সেজন্য জাতিগতভাবে চেষ্টা করতে হবে। এজন্য আমাদেও মানব সম্পদকে দক্ষ ও যুগপোযোগী করে গড়ে তুলতে হবে। ভুলে গেলে চলবে না আমরা এখন জনমিতির সুবিধা ভোগ করছি। অর্থাৎ আমাদের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকই তরুণ। এদেরকে কাজে লাগাতে হবে। পৃথিবীর যেসব দেশ এই জনমিতির সুবিধা ব্যবহার করতে পেরেছে তারাই উন্নতি করতে পেরেছে।

শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন দরকার উল্লেখ করে মন্ত্রী আরও বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবেলা করার জন্য যে ধরনের শিক্ষা দরকার, ট্রেনিং দরকার তা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দিতে পারছে না। আমাদেও কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন পর্যন্ত অর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স, রোবটিক্স এইসব বিষয় পড়ানো হয় না। এটা দুঃখজনক। এসব বিষয়ে নজর দিতে হবে বলে মন্তব্য করেন মোস্তাফা জব্বার।

ড্যাফোডিল পরিবারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নূরুজ্জামান বলেন, অর্থনীতিতে জিগ ইকোনোমি বলে একটি শব্দ আছে। এর মানে শুধু ফ্রিল্যান্সিং নয়, বরং ভার্চুয়াল সব ধরনের কাজকেই জিগ ইকোনোমি বলা হয়। কোভিড পরিস্থিতির কারণে সারা পৃথিবীতেই জিগ ইকোনোমির প্রসার বেড়েছে। এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে নিজের ভার্চুয়াল দক্ষতা বাড়ানো ছাড়া কোনো উপায় নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।

মোহাম্মদ নূরুজ্জামান আরও বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠান ভার্চুয়ালি অফিস পরিচালনা করতে পেরেছে তারাই এখন পর্যন্ত টিকে আছে। যারা পারেনি তাদের অধিকাংশই বন্ধ হয়ে গেছে। সুতরাং প্রতিষ্ঠানগুলোকেও প্রস্তুত হবে হবে ভার্চুয়াল অফিস পরিচালনা করার জন্য। এসময় তিনি স্কিল ডট জবসের উদাহরণ দিয়ে বলেন, স্কিল ডট জবস এর এই ভার্চুয়াল জব ফেস্ট পুরো আয়োজনটি ভার্চুয়ালি আয়াজন করেছে এবং এ পর্যন্ত ৬০৮জন চাকরীপ্রার্থীর সিভি সংশ্লিষ্ট নিযোগদাতা প্রতিষ্ঠানের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে।

বেসিসের প্রেসিডেন্ট সৈয়দ আলমাস কবির তাঁর বক্তব্যে বলেন, করোনা পরিস্থির কারণে আমরা এখন হোম অফিস করছি। কিন্তু হোম অফিসের এই ধারণা নতুন নয়। অন্তত চল্লিশ বছর আগেও মানুষ হোম অফিস করত। তখন টেলিকমিউনিকেশনের মাধ্যমে হোম অফিস করা হতো। এখন ইন্টানেটের কারণে হোম অফিস আরও সহজ হয়েছে।

সামনের দিনগুলোতে হোম অফিসের ব্যবহার আরও বাড়বে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে গেলেই ভার্চুয়াল কাজ শেষ হয়ে যাবে না। বরং আরও বাড়বে। প্রতিষ্ঠানগুলো ফুলটাইম কর্মীর পরিবর্তে পার্ট টাইম কর্মীকে বেশি নিয়োগ দিবে। তাছাড়া ভার্চুয়াল জব পরিবেশবান্ধব বলেও মন্তব্য করেন বেসিস সভাপতি। তিনি বলেন, অনেক মানুষ যখন ঘরে বসে ভার্চুয়াল অফিস করবেন তখন রাস্তায় জানযট কম হবে। কারণ অনেক মানুষের ঘর থেকে বের হওয়ার প্রয়োজন হবে না।

ভার্চুয়াল জব ফেস্টের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বক্তারা আরো বলেন, মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে আমরা একটি রূপান্তরিত সময়ের পর্যায়ে চলে এসেছি যার কারণে আমাদের জীবনযাত্রা, কাজ করার পদ্ধতি, চিন্তা-ভাবনা সবকিছুই বদলে যাচ্ছে। প্রায় সব ধরনের সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানগুলো সামাজিক দূরত্ব শব্দটিকে কেন্দ্র করে তাদের কাজের পদ্ধতিতে পরিবর্তন এনেছে। বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে ঘরে বসে কাজ করার সুযোগ তৈরি করেছে। এরফলে কর্মক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রতিভাসম্মন্ন কর্মীর চাহিদা তৈরি হয়েছে। এসব দিক বিবেচনায় স্কিল জবস এর এ আয়োজন অত্যন্ত সময়োপযোগী।

Loading

শেয়ার করুন: