নির্যাতিত ও বঞ্চিত মানুষরা এখনও সাংবাদিকদের কাছেই ছুটে আসে:সাইফুল আলম

মোরশেদ সেলিম:

জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি, চাঁদপুরের কৃতি সন্তান ও দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম বলেছেন, আমি আপনাদেরই সন্তান। আমি চাঁদপুরের ছেলে। এখানে আমার আদিনিবাস।আমার বাপ-দাদার ভিটে রয়েছে। যে জন্য যখনই আমি চাঁদপুরে আসি, চাঁদপুরের বাতাস আমাকে যেন অন্যরকম ভাবে শিহরিত করে। কারণ আমার পিতার পিতারও শৈশব এই মাটিতে কেটেছে। তাদেরই উত্তারিধকার হিসেবে আমি আজ এই পৃথিবীতে আছি। এটি আমার অহংকার ও গর্বের জায়গা। আমি এটি নিয়ে গর্ব করি। আমি ঢাকায় থাকলেও চাঁদপুরকে অনুভব করি, যে আমার শেকড়টা কোথায় গাঁথা।সোমবার (৪ জানুয়ারি) রাতে চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।

প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গিয়াসউদ্দিন মিলনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সাংবাদিক সমাবেশটি পরিচলনা করেন সাধারণ সম্পাদক এএইচএম আহসান উল্যাহ। উক্ত অনুষ্ঠানে জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ের প্রায় দু শতাধিক সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।

তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আজকের অনুষ্ঠানে সাংবাকিরা তাদের পরিচয় দিয়েছেন ও সাংবাদিকদের মিলন মেলা। আজকে জেলা ও উপজেলার সকল পর্যায়ের সাংবাদিকরা এখানে উপস্থিত হয়েছেন। কোভিড-১৯ এর কারণে আমরা এখন মুখোশের মধ্যে বন্ধি। আমরা একে অপরের পাশ দিয়ে হেঁটে গেলেও বুঝতে পারিনা পরিচয়। পরে বলেন, আমি চলে গেলাম আমাকে দেখলেনও না। পরিচয় দেয়ার পর বুঝতে পারি খুব পরিচিত মানুষ আমার স্বজনরা পাশ দিয়ে হেঁটে গেছেন। সেরকম একটা পরিস্থিতিতে অনেকে দাঁড়িয়ে এখানে পরিচয় দিয়েছেন। আমার সবগুলো মুখ আজ দেখা হয়নি, সে জন্য আমি কিছুটা ঝুঁকি নিয়ে আমার মুখোশ খুলে রেখে সাহস করে বক্তব্য দেয়ার জন্য দাঁড়িয়েছি। আপনারা কিছুক্ষণের জন্য হলেও আমাকে মার্জনা করবেন।

আজকে সাংবাকিদ বন্ধুরা তাদের পরিচয় দিলেও তাদের পরিবারের সদস্যরা পরিচয় দেননি। এতে হতাশ হওয়ার কিছু নাই। আপনাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, আজকে আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী ও স্পিকার নারী। চাঁদপুরের বর্তমান জেলা প্রশাসক নারী, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নারী ও কিছুদিন পূর্বে সদর উপজেলায় যিনি ইউএনও ছিলেন তিনিও নারী ছিলেন। এর আগে চাঁদপুরের পুলিশ সুপার ছিলেন নারী। নারীরা এখন পুরুষের সমানে মেধা ও যোগ্যতা দিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন।

সাইফুল আলম বলেন, চাঁদপুরের অনেক সাংবাদিক রয়েছে যারা সারা বাংলাদেশে কৃতিত্বের সাথে কাজ করে যাচ্ছেন। শুধুমাত্র চাঁদপুরেই নয়, ঢাকার শহরের পত্রিকা, টেলিভিশন ও অন্যান্য গনমাধ্যমে চাঁদপুরের সাংবাদিকরা নেতৃত্বে দিচ্ছেন। এটি আমাদের একটি গর্ব ও অংহকারের জায়গা তৈরী করে।
আপনারা জানেন আজ থেকে ৬৬ বছর আগে জাতীয় প্রেসক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে বাংলাদেশের সাংবাকিতদার যারা মহিরুহ কিংবদন্তী মজিবুর রহমান, তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া, জহুর হোসেন চৌধুরী, আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, এনায়েত উল্ল্যাহ খান, রিয়াজ উদ্দিন আহম্মেদ, ইকবাল ছোবহান চৌধুরী। এদের নেতৃত্বের মাধ্যমে জাতীয় প্রেসক্লাব গঠিত হয়েছে।

তিনি বলেন, চাঁদপুরের প্রেসক্লাবকে মনে করি চাঁদপুরের সাংবাদিকদের অহংকার। প্রেসক্লাবটা কি? আমরাকি এটাকে শুধুমাত্র ক্লাব হিসেবে চিহ্নিত করি। এটিকি একটি আনন্দ ও মিলনমেলা। এই বিষয়টাকে আমি একটু ভিন্নভাবে দেখি। আমি দুই বছর জাতীয় প্রেসক্লাবের দায়িত্ব পালন করেছি। এসময় আমি দেখেছি, বাংলাদেশের মানুষ যখন নির্যাতিত ও বঞ্চিত হয়, প্রতারিত হয় ও ন্যায্যা পাওনা থেকে বঞ্চিত হয়, তখন মানুষ কার কাছে ছুটে যায়। হয় সাংবাদিকের কাছে কিংবা জতীয় প্রেসক্লাবে ছুটে আসে। কি জন্য যায়! যায় এ জন্য, তার বিশ^াস ওই জায়গায় গেলে আমি আমার কথাটা বলতে পারবো। ওই জায়গা গেলে আমি আমার অধিকার পিরে পাব।

সাইফুল আলম বলেন, আজকের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি। তিনি আসতে পারেননি করোনার কারণে। আজকে তিনি আসলে দেখতে পারতাম। এই করোনার সময় অনেক মানুষকেই দেখতে পারিনা। কাউকে দেখলেই আমার কেন যেন ছুঁয়ে দেখতে ইচ্ছে করে। মূলত করোনাকালে আমাদের যে মনেরভাব ও ভালোবাসা সেটি অনেক বেশী জাগ্রত হয়েছে।

সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে করোনাকালীন সময়ে অগ্রনী ভূমিকা পালন করায় চিকিৎস, নার্স, সংগঠন, সাংবাদিক ও ৫০বছরপূর্তি উৎসব সম্মাননা প্রদান করা হয়।

এর আগে সকালে বর্ণাঢ্য র‌্যালীর মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়। সাংবাদিক সমাবেশ,সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আলোচনা, সংবর্ধনা, সম্মাননা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও র‌্যাফেল ড্র ছিলো দিনব্যাপী কর্মসূচি।

Loading

শেয়ার করুন: