প্রতিটা ধর্মেই শান্তি ও সম্প্রীতির কথা বলা আছে:চাঁদপুর জেলা প্রশাসক

নিজস্ব প্রতিবেদক:

চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেছেন,ইতিহাস থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত। আমরা যদি ব্রিটিশ আমলের শাসন ব্যবস্থা লক্ষ্য করি দেখি, তারা খুবই চতুর ছিলো। তারা আমাদের দেশে যখন কর্ম স্থাপন করে তখন তারা আমাদের ইতিহাস, সংস্কৃতি ধর্মীয় অনুভূতি সবকিছু সম্পর্কে অবগত হয়েছিলো। তারা সবকিছু অবগত হয়ে চিন্তা করেছিলো যে এই দেশে যদি শাসন ব্যবস্থা কায়েম করতে হয় তাহলে আমাদের মধ্যে ভাঙ্গন ধরাতে হবে। তখন তারা চিন্তা করলো একমাত্র ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনে আমাদের মধ্যে ভাঙ্গন ধরানো সম্ভব এবং তারা এই পথ অবলম্বন করে এদেশে শাসন ব্যবস্থা চালিয়েছিলো। তাই এর থেকে আমরা শিক্ষা নিতে পারি, যখন একটা সাম্প্রদায়িক বিভেদ সৃষ্টি করা যায়, সম্প্রীতিটা নষ্ট করা যায়, সেখানে কোন ধর্মে বা কোন ব্যক্তির লাভ হয় না সেখানে সবসময় লাভ হয় তৃতীয় পক্ষের। আর কাজটা হবে আমরা কখনোই তৃতীয় পক্ষকে লাভবান হতে দিবো না। আমাদের মধ্যে সবসময় সম্প্রীতি, ধর্মীয়বোধটাকে জাগ্রত রাখবো।

২৩ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সচেতনামূলক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জেলা প্রশাসক বলেন, ‘প্রতিটা ধর্মেই শান্তি ও সম্প্রীতির কথা বলা আছে। কোন ধর্মেই একজন আরেকজনকে আঘাত করার কথা বা বিদ্বেষ সৃষ্টির করার কথা নাই। আমরা ইসলাম ধর্মের কথা বলি, ইসলাম মানেই শান্তি,ইসলাম মানেই শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান। আমরা হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর উম্মত। তিনি কখনো কোন ধর্মে প্রতি বিদ্বেষমূলক কথা বলেন নাই। তাঁর কথায় কোন ব্যক্তি আঘাত পাক তা বলেন নাই। সবসময় তিনি শান্তি ও সহনশীলতার কথা বলেছেন। মক্কা বিজয়ের সময় তাঁর উপর অনেক অত্যাচার হয়েছিলো। তিনি পারতেন মক্কাতে অন্য ধর্মাবলম্বী যারা ছিলো তাদেরকে বিনাশ করে দিতে পারতেন। সেই শক্তি, সামর্থ্য তাঁর ছিলো কিন্তু তিনি তা করেন নি। তিনি সহনশীলতার কথা বলেছেন। আমাদের ধর্মতেই শান্তির কথা বলা আছে। যে যার ধর্ম শান্তিমত পালন করবে। ঠিক অন্যান্য ধর্মতেও কাউকে আঘাত করার কথা বলা নাই। ধর্মীয় অনুভূতি যাদের মধ্যে প্রখর তারা অন্য ধর্মের ব্যক্তিকে বা অনুভূতিকে আঘাত দিয়ে কথা বলতে বা কাজ করতে পারে না।’

ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সচেতনতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের প্রকল্প-পরিচালক (উপ-সচিব) আবদুল্লা আল শাহীন’র সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ বিপিএম (বার), সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা শাহনাজ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর উপ-পরিচালক মোহাম্মদ খলিলুর রহমান, প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি এএইচএম আহসান উল্লাহ।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর ফিল্ড অফিসার মাওলানা বিল্লাল হোসেনের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন ইমাম সমিতির সভাপতি মাওলানা সাইফুদ্দিন খন্দকার, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আব্দুস ছালাম, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তমাল ঘোষ, হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক পিপি রনজিত রায় চৌধুরী প্রমূখ।

Loading

শেয়ার করুন: