প্রশংসা কমিয়ে দিয়ে বেশি করে ক্রুটি ধরিয়ে দিবেন: মেয়র জুয়েল

তৃতীয় নগর পরিচালন ও অবকাঠামো উন্নতিকরণ প্রকল্প-৩-এর আওতায় নগর পরিচালন উন্নতিকরণ কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে চাঁদপুর পৌরসভার নগর সমন্বয় কমিটির (টিএলসিসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৩ মার্চ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় চাঁদপুর পৌর পাঠাগারে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন পৌরসভার মেয়র মো. জিল্লুর রহমান জুয়েল।

সভায় স্বাগত ও সমাপনী বক্তব্যে পৌরসভার মেয়র বলেন, টিএলসিসি কমিটি করা হয়েছে পৌর পরিষদের পাশাপাশি বিশিষ্ট নাগরিকদের মতামত ও পরামর্শে সমন্বয়ে যেকোনো কর্মকান্ডের সুন্দর পরিকল্পনা করা। তাই এই কমিটির সভাগুলোতে আপনারা প্রশংসা কমিয়ে বেশি করে সমালোচনা করবেন, ক্রুটি ধরিয়ে দিবেন। এই কমিটির সভা যেন শুধুমাত্র প্রশংসা নির্ভর না হয়। এখানে আপনারা সবাই যে কোন বিষয়ে প্রাণ খুলে কথা বলবেন, পরামর্শ দিবেন এবং ভালো-মন্দ নিয়ে সমালোচনা-আলোচনা করবেন। এতে করে আমাদের কাজগুলো সুন্দর এবং পরিশুদ্ধ হবে, আমরা ভুলক্রটি বুঝতে পারব। আমি মনে করি, আমরা কি ভালো করেছি সেটি আলোচনার বিষয় নয়, আলোচনার বিষয় হলো কি কি ভালো কাজ করা যায় এবং বিগত কাজে কোন ক্রটি আছে কি না।

মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল আরো বলেন, আপনারা ইতোমধ্যেই অবগত হয়েছেন যে, আমাদের নতুন নির্বাচিত পরিষদ দেনাগ্রস্ত পৌরসভার দায়িত্বভার গ্রহণ করেছে। বিদ্যুৎ বিল সহ পৌরসভার কর্মচারীদের ৬মাসের বেতন বকেয়া ছিল। তাই আমরা সকল ক্ষেত্রে অপব্যয় কমিয়ে আয় বাড়ানোর দিকে বেশি মনোযোগী হয়েছি। যার ফলে আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর পৌর কর্মচারীদের প্রতি মাসের বেতন নিয়মিত দেওয়ার পাশাপাশি ৬মাসের বকেয়া বেতন থেকে ২ মাসের বেতন পরিশোধ করতে সক্ষম হয়েছি।

আশা করছি অচিরেই পুরো বকেয়া টাকা পরিশোধ করতে পারব। ২০০৭ সাল থেকে অবসরে যাওয়া পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এককালিন পেনসনের প্রায় সাড়ে 8 কোটি টাকার বকেয়া রয়েছে। আমরা পরিকল্পনা করেছি ২০০৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত যাদের অবসরকালীন ভাতা বকেয়া ছিল তাদের মধ্যে ২০১৩ সাল পর্যন্তদের সমস্ত টাকা এক সাথে করে করে পরিশোধ করে ফেলব। এরপর পর্যায়ক্রমে বাকিদের টাকাও পরিশোধ করা হবে।

তিনি বলেন, পৌরসভার মশার উপদ্রব বেড়েছে। অপরিকল্পিত ভাবে গড়ে তোলা ডাস্টবিন গুলো সম্প্রসারণ করা হবে। ড্রেনগুলো দীর্ঘদিন সংস্কার হয়নি, সেই কাজ চলমান রয়েছে। পানির বিল কিছুটা বাড়ানো হয়েছে। অন্যান্য জায়গায় যেখানে পানির বিল থেকে প্রাপ্ত আয় দিয়েই পৌরসভার উন্নয়ন কর্মকান্ড চলে, সেখানে চাঁদপুর পৌরসভা পানির বিলে ভর্তুকি দিয়ে আসছে। এক্ষেত্রে চাঁদপুর পৌরসভা শুধুমাত্র বাংলাদেশে নয় বিশ্বের যে কোন দেশের তুলনায় ব্যতিক্রম। আমরা কোনো অবস্থাতেই নাগরিকদেরকে ভোগান্তির মধ্যে ফেলতে চাইনা। নাগরিক সেবার মান বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সকলের কাছ থেকে সহযোগিতার আহবান করছি। আমাদের সীমিত সম্পদ, তাই আমরা যা কিছুই করব তা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে সুন্দরভাবে করব।

পৌরসভার প্রশাসনিক কর্মকর্তা মফিজউদ্দিন হালদারের পরিচালনায় সভার শুরুতেই বিগত সভার কার্যবিবরণী, সিদ্ধান্ত সমূহের অগ্রগতি তুলে ধরেন পৌরভার সচিব আবুল কালাম ভূঁইয়া।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি জাহাঙ্গীর অাখন, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী, সাধারণ সম্পাদক রহিম বাদশা, সাবেক সভাপতি কাজী শাহাদাত, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. মুজিবুর রহমান ভুইয়া, চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রশীদ, পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাধা গোবিন্দ গোপ, সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান বাবুল, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক অধ্যাপিকা মাসুদা নূর খান, শিক্ষামন্ত্রীর প্রতিনিধি অ্যাড. সাইফুদ্দিন বাবু, প্যানেল মেয়র মোহাম্মদ আলী মাঝি, ফরিদা ইলিয়াছ, সঙ্গীতশিল্পী রুপালী চম্পক প্রমুখ।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, পৌরসভার কাউন্সিলর মালেক শেখ, আ. লতিফ শেখ, মাহমুদুর রহমান দোলন, মো. সাইফুল ইসলাম ভুঁইয়া, মো. সোহেল রানা, মো. সফিকুল ইসলাম, অ্যাড. হেলাল হোসাইন, মো. ইউসুফ শেখ শোয়েব, ইকবাল হোসেন বাবু পাটওয়ারী, মো. হাবিবুর রহমান দর্জি, আলমগীর গাজী, খায়রুল ইসলাম নয়ন মিজি, অ্যাড. কবির চৌধুরী, সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফেরদৌসি আক্তার, খালেদা খানম, ওয়ার্ডে আয়শা রহমান ও শাহনাজ বুলবুল।

Loading

শেয়ার করুন: