বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আমরা মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস থেকে বঞ্চিত হয়েছি : অন্জনা খান মজলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

সারাদেশের ন্যায় চাঁদপুরবাসীও নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে স্মরন করছেন বাংলার অবিসংবাদিত নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। তারা উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপন করেন জাতির জনকের ২০২তম জন্মবার্ষিকী। জাতীয় শিশু কিশোর দিবস হিসেবেও দিনটি উদযাপিত হয়।

জন্মবার্ষিকী দিবসটি স্মরনীয় করে রাখতে জেলা আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জেলা প্রশাসনও সপ্তাহব্যাপী ব্যাপক আয়োজন করেন দিবসটি উদযাপনে।

চাঁদপুর জেলা প্রশাসন কতৃক আয়োজিত জাতির জনকের জন্মদিবস উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী আয়োজনের প্রথম দিন গত ১৭ মার্চ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১ টায়, চাঁদপুর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত জাতির জনকের জন্মদিবসের আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্য রাখেন প্রশাসক অন্জনা খান মজলিশ।

তিনি কৃতজ্ঞ চিত্তে জাতির জনকের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, এই মহান নেতার মৃত্যুর পর আমরা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির শিকার হয়েছি। সঠিক ইতিহাস থেকে বঞ্চিত হয়েছে জাতি৷ দেশের স্বাধীনতা অর্জনে জাতির জনকের অবদান, শিশু কিশোরদের প্রতি তার অনবদ্য ভালোবাসা, দেশ গঠনে তার যে চিন্তা চেতনা তা আমাদের প্রজন্মকে জানাতে হবে। শুধু বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসি, শেখ হাসিনাকে ভালোবাসি, দেশকে ভালোবাসি বললেই হবে না, তা কাজের মাধ্যমে প্রমান করতে হবে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে, মাটি কাটার বিরুদ্ধে, বালু কাটার বিরুদ্ধে, জাটকা নিধনের বিরুদ্ধে, মাদক, ইভটিজিং, সন্ত্রাষের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে, প্রশাসনের স্বল্প সংখ্যক লোক দিয়ে সব কিছু সব সময় মোকাবেলা করা সম্ভব না। এজন্য প্রয়োজন আপনাদের সহযোগিতা। এক্ষেত্রে আপনাদের অগ্রনী ভূমিকা পালন করতে হবে। আপনাদের জনশক্তি কাজে লাগাতে পারলেই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়া সম্ভব হবে। এজন্য প্রয়োজন আপনাদের সহযোগিতা।

তিনি রাশিয়া ইউক্রেনের যুদ্ধের কারনে দেশে জিনিষপত্রের দাম কিছুটা বেড়েছে উল্লেখ করে বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা মূল্যবৃদ্ধি প্রতিরোধে বেশ-কিছু ব্যবস্থা গ্রহন করেছেন। ১ কোটি ৪৭ জনকে ফ্যামিলি কার্ড প্রদান করা হবে, একার্ডের মাধ্যমে রোজার আগে ও পরে প্রতিজন ২ বার করে টিসিবির ডাল, তেল, চাল,পেয়াজ পাবেন। আশা করি আমরা সকলেই দ্রব্য মূল্যের উদ্ধগতির সমষ্যা থেকে উত্তরন পাবো। বঙ্গবন্ধু জাতি গঠনে ও দেশের উন্নয়নে নিরলস পরিশ্রম করে গেছেন। বর্তমানে তার সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাও তার দেখানো পথে এগিয়ে চলছেন, দেশ আজ এগিয়ে চলছে জাতির জনকের কন্যার হাত ধরে। আমাদেরকে উন্নয়নের এই ধারাবাহিতা অব্যাহত রাখতে হবে।

আলোচনা সভায় অতিথিদের মাঝে বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ বিপিএম (বার), জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব নাছির উদ্দীন আহমেদ, সাধারন সম্পাদক আলহাজ্ব আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ শাহাদাত হোসেন,ডিডি এনএসআই এবি এম আরমান,চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি গিয়াসউদ্দিন মিলন, সাবেক সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী, জেলা সায়স্কৃতিক জোটের সভাপতি তপন সরকার।

অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন তেলোয়াত করেন মোঃ শাহাদাত হোসেন ও পবিত্র গীতা থেকে পাঠ করেন চাঁদপুর কন্ঠের চীফ রিপোর্টার বিমল চৌধুরী।

আলোচনা শেষে জাতির জনকের ১০২ তম জন্মদিনের কেক কাটেন জেলা প্রশাসকসহ অতিথিবৃন্দ। পরে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া শিশুদের মাঝে পুরস্কার বিতরন করা হয়। পরে চাঁদপুরের শিল্পীদের পরিবেশনায় অনুষ্টিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

এদিন সকাল সাড়ে ৯ টায় উৎসবমুখর পরিবেশে সকল শ্রেনী পেশার মানুষের ব্যাপক উপস্থিতিতে, চাঁদপুর স্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসন আয়োজিত স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে মুক্তির উৎসব ও সুবর্ণজয়ন্তী মেলার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক অন্জনা খান মজলিশ।

এসময় পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ,জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি গিয়াসউদ্দিন মিলন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, রাজনীতিক নেতৃবৃন্দ, বীর মুক্তিযোদ্ধা,সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধিসহ সামাজিক, সাংস্কৃতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। পরে জেলা প্রশাসকসহ অতিথিবৃন্দ মেলায় অংশ নেওয়া জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ, জেলা পরিষদ, চাঁদপুর পৌরসভা, চাঁদপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়, উপজেলা প্রশাসন, আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, চাঁদপুর সরকারি কলেজ, চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজ, গণপূর্ত বিভাগ, সড়ক ভবন, জেলা ক্রীড়া সংস্থা, জেলা প্রানি সম্পদ দপ্তর, নৌপুলিশ চাঁদপুর অঞ্চল, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, জেলা শিক্ষা অফিস, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস, জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর, জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, জেলা পরিসংখ্যান কার্যালয়, জেলা মৎস কর্মকর্তা অফিস, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, পানি উন্নয়ন বোর্ড, ফায়ার সার্ভিস, সিভিল ডিফেন্স, বিআরটিএ চাঁদপুর সার্কেল, বিআইডব্লিউটিসি চাঁদপুর অঞ্চল, কাস্টমস এক্মসাইজ ও ভ্যাট বিভাগ, জেলা খাদ্য বিভাগ, বিটিসি এল বাংলাদেশ, জেলা সমবায় কার্যালয়, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, জেলা নির্বাচন অফিস, কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর, জেলা উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা বুরো, চাঁদপুর পল্লী বিদুৎ সমিতি -২, চাঁদপুর প্রধান ডাকঘর, বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড, বিআরডিবি, সকল সরকারি বেসরকারি ব্যাংক, চাঁদপুর নদী বন্দর, জেলা আনসার ও ভিডিপি, জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়, বাংলাদেশ মৎস গবেষনা ইনস্টিটিউট, জেলা তথ্য অফিস, পরিবেশ অধিদপ্তর, চাঁদপুর বন বিভাগ, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র কুটির শিল্প, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, সমাজসেবা অধিদপ্তর, জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস, ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কতৃপক্ষ, চাঁদপুর ডায়াবেটিস হাসপাতাল, মাজহারুল হক বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতাল, চাঁদপুর শিল্পকলা কেন্টিন, বদলাও ইয়ুথ ফাউন্ডেশন, প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রসমূহের স্টলগুলো পরিদর্শন করেন। উদ্বোধন শেষে ৫০ টি জাতীয় পতাকাবাহী ৫ টি সু সজ্জিত গাড়ীতে করে বাংলার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অংশগ্রহণের মধ্যে দিয়ে রেলী বের করা হয়। রেলীটি জেলা শহর প্রদক্ষিন করেন এসময় জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের প্রশাসনিক নেতৃবৃন্দ তাদের গাড়ি বহরে যোগ দেন।

জেলা প্রশাসন আয়োজিত স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির জনকের ১০২ তম জন্মজয়ন্তীতে এমন সু সজ্জিত সুবর্ণজয়ন্তী রেলীতে সকলেই আবিভূত হয়ে পরেন। রেলীটি চাঁদপুর জেলা শহর প্রদক্ষিন শেষে জাতীয় পতাকাবাহী গাড়ীর একেকটি চাঁদপুর জেলার একেক উপজেলায় গিয়ে পৌছেন। সেখানে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাদেরকে স্বাগত জানান।

Loading

শেয়ার করুন: