যে কারণে বিষ্ণুপুর ভাঙছে

চাঁদপুর সদর উপজেলার ১নং বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ৩ নং ও ৫ নং ওয়ার্ড এলাকায় গত ৬/৭ বছর যাবত ধনাগোদা নদী ভাঙছে। প্রায় ৪০ মিটার এলাকায় থেমে থেমে ভাঙছে। সরজমিনে ওই ভাঙ্গন এলাকায় গিয়ে এই নদীর যে গতি-প্রকৃতি দেখা গেলো, তাতে বুঝা গেলো এই নদী আশপাশে ভাঙ্গার কথা না। নদীটা তেমন খরস্রোতা নয়। যদিও নদীটির গভীরতা রয়েছে। তবে এই নদী উত্তাল নয়। সবসময়ই শান্ত থাকে। তারপরও কেনো নদী ভাঙছে? এর কারণ খুঁজতে গিয়ে জানা গেলো নদীর স্বাভাবিক গতিপ্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করা হয়েছে। এ কারণে নদীটি পাড়ে এসে আঘাত করছে।

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডস্থ দামোদরদী এবং ৫নং ওয়ার্ডস্থ খেয়াঘাট এলাকায় গিয়ে স্থানীয়দের সাথে এই প্রতিবেদকের কথা হয়। স্থানীয় আলমগীর মুন্সী, সুরুজ গাজী ও মোস্তফা গাজী জানান, ধনাগোদা স্লুইচ গেটে এবং আমিরাবাদ ধনাগোদা প্রজেক্টে (ব্লক বাঁধে) তিনটি খাল ছিল। এই খাল তিনটি ৫/৬ বছর আগে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তৎকালীন মতলব উত্তর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মঞ্জুর আহমেদ মঞ্জু বিষ্ণুপুর খেয়াঘাট এলাকায় এবং এই বরাবর ধনাগোদা নদীর উত্তর পাড়ে প্রায় তিন বিঘা জমি নিয়ে নানা প্রজেক্ট করেছেন। তার এই প্রজেক্টের কারণে তিনি ধনাগোদা স্লুইচ গেট এবং আমিরাবাদ ধনাগোদা প্রজেক্টের তিনটি খাল বন্ধ করে দিয়ে রাস্তা করেছেন। এলাকাবাসীর প্রবল আপত্তি সত্ত্বেও তিনি খালগুলো বন্ধ করে দেন। এতে দেখা গেলো যে, নদীর স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এতে করে প্রবলবেগে জোয়ারের সময় নদীর স্রোত এসে বিষ্ণুপুরের দামোদরদী এবং খেয়াঘাট এলাকায় তীরে এসে আঘাত করছে। তখনই ভাঙ্গন দেখা দেয়। এরপর থেকেই মূলত বিষ্ণুপুর এলাকায় ধনাগোদা নদীর ভাঙ্গন শুরু হয়।

এলাকাবাসী বলেন, ভাঙ্গন রোধে যে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে তাতে সাময়িকভাবে ভাঙ্গন হয়ত বন্ধ হবে, কিন্তু ভাঙ্গনের আশঙ্কা থেকেই যাবে। কারণ নদী একদিকে বাধা পেলে অন্যদিকে আঘাত করবে এটাই স্বাভাবিক। তাই যেখানে খাল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে সেখানে খালগুলো পুনরুদ্ধার করে নদীর স্বাভাবিক গতিপ্রবাহকে যদি ফিরিয়ে আনা হয়, তখনই হয়ত বিষ্ণুপুর এলাকায় ধনাগোদা নদীর ভাঙ্গন স্থায়ীভাবে বন্ধ হবে। এ ব্যাপারে বিষ্ণুপুর ইউনিয়নবাসী শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপির হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

Loading

শেয়ার করুন: