রাজরাজেশ্বরে পদ্মার ভয়াবহ ভাঙ্গন

নিজস্ব প্রতিবেদক

চাঁদপুর সদর উপজেলার ১৪নং রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রামে পদ্মার ভয়াবহ ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। গত ২ দিন ধরে পদ্মা মেঘনা নদীর পানি হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় এতে প্রবল স্রোতের সৃষ্টি হয়ে এ ইউনিয়নে তীব্র নদী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।

ভাঙ্গনের কবলে ইতিমধ্যে রাজারচর, মান্দের বাজার, খাসকান্দি, লগ্মীমারাচর, দেওয়ান বাজার এলাকার প্রায় শতাধিক পরিবার বসত ভিটাহীন হয়ে গেছে এবং এসব এলাকা বেশ কয়েকটি অংশ ভেঙ্গে যায়। ঘরবাড়ি হারানো পরিবারগুলো ইউনিয়নের বাঁশগাড়ি, মাঝেরচর, গোয়াল নগর, রায়েরচরসহ বিভিন্ন উঁচু এলাকায় গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। মাটি ধস অব্যাহত থাকায় ভাঙ্গনের মুখে রয়েছে আরো অনেক ঘর-বাড়ি।

হঠাৎ উত্তরাঞ্চলের বন্যার পানি পদ্মা ও মেঘনা দিয়ে নেমে আসায় নদীতে প্রবল স্রোত দেখা দেয়। যার ফলে রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নে এ ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়। শনিবার থেকে ওই এলাকায় ভাঙন শুরু হয় সবচেয়ে বেশি। পদ্মার ভাঙনে এ পর্যন্ত শতাধিক ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ভিটে-মাটি হারানো পরিবারগুলোর মাঝে চলছে আহাজারি। আবার আতঙ্কিত অনেকেই ব্যস্ত ঘর ও আসবাবপত্র সরিয়ে নেয়ার কাজে।

ভাঙন কবলিত লোকজন জানান, জোয়ার শেষে ভাটা শুরুর সময়টাতেই ভাঙন বেশি দেখা দেয়। শনিবার সকালে ভাঙন শুরু হয়। তারা বলছেন, আমরা কোনও ত্রাণ চাই না। আমরা চাই আমাদের ভিটে রক্ষায় স্থায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক। এলাকার ভাঙন ঠেকাতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান তারা।

রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ মো.হযরত আলী বেপারী জানান, উজান থেকে প্রবল বেগে বন্যার পানি চাঁদপুর মেঘনা নদী দিয়ে বঙ্গোপসাগরে প্রবাহিত হওয়ায় রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের চর এলাকায় মেঘনা ও পদ্মা নদীর মিলনস্থলে প্রচন্ড ঢেউ এবং ঘূর্ণি স্রোতের সৃষ্টি হয়েছে। যার কারণে নদী এবার বর্ষায় ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে নদী ভাঙ্গছে। এ পরিস্থিতিতে ইউনিয়নের রাজারচর, মান্দের বাজার, খাসকান্দি, লগ্মীমারাচর, দেওয়ান বাজার এলাকার প্রায় শতাধিক পরিবার বসতঘর ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে। ওই এলাকার নদীর তীরবর্তি বাকী অংশগুলোও ভাঙ্গনের আংশাকা রয়েছে তাই আমরা ঘর বাড়ি সরিয়ে নিচ্ছি। আমরা ঘর বাড়ী ভাঙ্গনের শিকারকৃত আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেছি। তাদের যতটুকু সহযোগিতা তা করার জন্য চেষ্টা করব। তিনি বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অবহিত করেন বলে জানান।

চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জানান, চাঁদপুরে কয়েকদিন ধরে পদ্মা-মেঘনার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিবছরেই নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে রাজরাজেস্বর ইউনিয়নে ভাঙ্গন দেখা দেয়। আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভাঙন প্রতিরোধে কাজ করছি।

Loading

শেয়ার করুন: