লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে পুনরায় নৌকা প্রতীক পেলেন সেলিম খান

সকল ষড়যন্ত্র, জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে চাঁদপুর সদর উপজেলার ১০নং লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে পুনরায় নৌকা প্রতীক পেলেন বর্তমান ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ সেলিম খান।

৩০ জানুয়ারি সকাল ১১টায় গণভবনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে নির্বাচনী মনোনয়ন বোর্ড কর্তৃক সকল যাচাই-বাছাই শেষে চাঁদপুর সদর উপজেলার ১০নং লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীক পেলেন মোঃ সেলিম খান।

এর পূর্বে ২০১৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মনোনয়ন বোর্ড ১০নং লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে মোঃ সেলিম খান নৌকা প্রতীক পেয়েছিলেন। সে সময় নির্বাচনের ভোটগ্রহণের সকল প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও সীমানা জটিলতার কারনে মহামান্য হাইকোর্ট ১০নং লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেন।

অবশেষে সীমানা জটিলতার মামলা নিষ্পত্তি হওয়ার পর নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। তফসিল ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি ১০নং লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে চেয়ারম্যান পদে পুনরায় নৌকা প্রতীক পাওয়ার পর ১০নং লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের সাধারণ মানুষের মাঝে উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে। আজ ৩১ জানুয়ারি রোববার সকালে নৌকা প্রতীকের মনোনয়নপত্র হাতে নিয়ে নৌকার মাঝি মোঃ সেলিম খান ঢাকা থেকে চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবেন। তাকে বরণ করার জন্য ১০নং লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের শ’ শ’ নেতা-কর্মী ও ইউনিয়নবাসী বাবুরহাট এলাকা থেকে শো-ডাউন করে মোঃ সেলিম খানকে নিজ এলাকায় নিয়ে আসবেন। ভালোবাসার কৃতজ্ঞতা স্বরূপ ইউনিয়নবাসী তাদের প্রিয় চেয়ারম্যান সেলিম খানকে অন্যভাবে বরণ করার জন্য অধির আগ্রহসহ সকল প্রস্তুতি নিয়েছেন।

উল্লেখ্য, ১৭ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশন কর্তৃক চাঁদপুর সদর উপজেলার ১০নং লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করেন। তফসিল ঘোষণার পর ১৯ জানুয়ারি ১০নং লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়।

ওই সভায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কার্যনির্বাহী পরিষদ,প্রতিটি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, যুবলীগের প্রতিটি ওয়ার্ডের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, ছাত্রলীগের প্রতিটি ওয়ার্ডের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং মহিলা আওয়ামী লীগের প্রতিটি ওয়ার্ডের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন।

চাঁদপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান ও সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) এরশ্বাদ মিয়াজীসহ উপজেলা আওয়ামী লীগের বেশক’জন দায়িত্বশীল নেতা ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন। তাদের উপস্থিতিতে তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা ১০নং লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মোঃ সেলিম খানের নাম প্রস্তাবনা করেন। প্রস্তাবনার পরিপ্রেক্ষিতে বর্ধিত সভায় এককভাবে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মোঃ সেলিম খানের নাম রেজুলেশানভুক্ত করা হয়। চেয়ারম্যান পদে আর কোনো প্রার্থীর নাম প্রস্তাবনায় না আসায় চাঁদপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ দলীয় সাংগঠনিক নিয়মানুযায়ী ১০নং লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে মোঃ সেলিম খানের নাম এককভাবে কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ডে প্রেরণ করা হয়। যার অনুলিপি চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককেও প্রদান করা হয়।

এদিকে চাঁদপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তকে পাশ কাটিয়ে এবং তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের সমর্থন ও তাদের চাওয়া-পাওয়াকে উপেক্ষা করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ১০নং লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে ৫ জন প্রার্থীর নাম কেন্দ্রে প্রেরণ করে। ৫ জন প্রার্থীর মধ্যে ১ জন প্রার্থী এ ইউনিয়নের ভোটার নয়। তার নাম আলমগীর গাজী। যিনি ঢাকার টঙ্গীতে বসবাস করেন এবং সেখানকার ভোটার। আরেকজন প্রার্থী ইব্রাহিমপুর ইউনিয়নের ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে। সে হচ্ছেন জয়নাল খাঁ। অপ্রিয় হলেও সত্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের সাথে থাকা সফিক গাজীর নাম পাঠানো হয়েছে ১ নম্বর তালিকায়। সবচে হাস্যকর হচ্ছে বর্তমান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ সেলিম খানের নাম তাদের প্রেরিত তালিকায় ৫ নাম্বারে রয়েছে। ১০নং লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের মাটি ও মানুষের সাথে যাদের সম্পর্ক নেই, এমনকি সেখানকার দলীয় কোনো কর্মকা-েও এদের দেখা যায়নি এবং দলীয় কোনো পদবীতেও এরা সম্পৃক্ত নয়, এ সকল মানুষজনকে কী কারনে প্রার্থী হিসেবে জেলা আওয়ামী লীগের মতো দায়িত্বশীল পদে থেকে তালিকা প্রেরণ করে দায়িত্বহীনতার কাজ করেছেন তা চাঁদপুরের আওয়ামী রাজনীতির সাথে যারা সম্পৃক্ত রয়েছেন, তারা বিষয়টি ভেবে দেখবেন। হিংসা, বিদ্বেষ ও ষড়যন্ত্র করে সাময়িকভাবে পার পাওয়া যায়। কিন্তু স্থায়ীভাবে ওইসকল ষড়যন্ত্রকারীদের নিয়ে সাধারণ মানুষ তথা আওয়ামী সমর্থকদের মাঝে নানা গুঞ্জনের সৃষ্টি হতে পারে। ক্ষমতা ও পদ এ দু’টি জিনিস চিরস্থায়ী নয়।

Loading

শেয়ার করুন: