শহর রক্ষাবাঁধ ভাঙ্গন প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণে শিক্ষামন্ত্রীর সকল প্রচেষ্টা অব্যাহত: জেআর ওয়াদুদ টিপু

প্রমত্তা মেঘনার প্রবল ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত চাঁদপুর পুরাণবাজার শহর রক্ষাবাঁধ পরিদর্শন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপির জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডাঃ জেআর ওয়াদুদ টিপু। তিনি বৃহস্পতিবার বিকেলে চাঁদপুর শহরস্থ পুরাণবাজার শহর রক্ষাবাঁধের বিভিন্ন অংশ পরিদর্শন করেন এবং ভাঙ্গন প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড চাঁদপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ রেফাত জামিলের সাথে আলোচনা করেন।

জেআর ওয়াদুদ টিপু ঘটনাস্থলে পৌঁছলে এলাকার মানুষ তাঁকে স্বাগত জানান এবং ভাঙ্গনকবলিত স্থান রক্ষায় জরুরিভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্যে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপির সহযোগিতা কামনা করেন।

তারা বলেন, ডাঃ দীপু মনি হাইমচর রক্ষায় যে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন তা মানুষ কৃতজ্ঞতার সাথে আজীবন স্মরণ রাখবে। আমরা মনে করি, ডাঃ দীপু মনির আন্তরিক চেষ্টাই আমাদের এই ভাঙ্গন রোধ হবে এবং আমাদের বাপ-দাদার ভিটামাটিতে আজীবন আমরা বসবাস করতে পারবো। তারা ডাঃ দীপু মনির সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু জীবন কামনা করেন।

এ সময় ডাঃ জেআর ওয়াদুদ টিপু এলাকাবাসীকে আশ্বস্ত করে বলেন, আপনারা হতাশ হবেন না। ডাঃ দীপু মনিকে আপনারা যেমন ভালোবাসেন, তিনিও আপনাদেরকে তেমনি ভালোবাসেন। তাঁর নির্দেশেই আমরা এখানে এসেছি। মন্ত্রী মহোদয় সার্বক্ষণিক আপনাদের খোঁজখবর রাখছেন। তিনি সর্বশেষ গত ৪ এপ্রিল ঝড়ের কারণে হরিসভা এলাকায় যে ভাঙ্গন দেখা দেয় সেই ব্যাপারেও অবগত আছেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণে প্রশাসন, পৌর মেয়রসহ পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তাদের নির্দেশনাও প্রদান করেন। এ স্থানের ভাঙ্গন প্রতিরোধসহ শহর রক্ষাবাঁধ রক্ষায় ডাঃ দীপু মনি এমপির সকল প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আপনারা জানেন, পুরাণবাজার শহর রক্ষাবাঁধ রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ড একটি জরিপ কাজ গ্রহণ শেষে একটি প্রকল্প গ্রহণ করে মন্ত্রণালয়ে পাঠান। তাদের পাঠানো সেই প্রকল্পটি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় গ্রহণ না করে পুনরায় নদীর অবস্থান সার্ভে করে আরও একটি প্রকল্প গ্রহণ করার জন্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশনা প্রদান করেন। যা করতে গেলে দীর্ঘমেয়াদী ভাঙ্গন প্রতিরোধ ব্যবস্থাগ্রহণে আরও ১/২ বছর সময়ের প্রয়োজন হতে পারে। এতো দীর্ঘসময় পার করে কাজ করতে গেলে হয়তো নদীভাঙ্গন প্রক্রিয়া আরও তীব্র থেকে তীব্রতর হতে পারে। ভেঙ্গে যেতে পারে ঐতিহ্যবাহী হরিসভা সড়কসহ মানুষের বাড়িঘর। তাই ডাঃ দীপু মনি জরুরিভাবে কার্যকর ব্যবস্থাগ্রহণে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে একটি কার্যকর পরিকল্পনা রিপোর্ট তৈরি করতে নির্দেশনা প্রদান করেছেন, যা তিনি মন্ত্রণালয়ে হাতে হাতে নিয়ে যাবেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করতে চেষ্টা করবেন। এক্ষেত্রে ডাঃ দীপু মনির চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তাদের প্রতি নির্দেশনা, আপনারা দীর্ঘসময় নিয়ে সার্ভে করুন, তাতে কোনো অসুবিধা নেই। তবে আগে কাজ শুরু করেন, যাতে নতুন করে ভাঙ্গনের ফলে কেউ কোনো ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আলহাজ মোঃ ইউছুফ গাজী, চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র অ্যাডঃ মোঃ জিল্লুর রহমান জুয়েল, ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডঃ জাহিদুল ইসলাম রোমান, চাঁদপুর জেলা জজ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডঃ রণজিত রায় চৌধুরী, চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ আইউব আলী বেপারী, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এএইচএম আহসান উল্লাহ, পৌরসভার প্যানেল মেয়র মোহাম্মদ আলী মাঝি, পৌর কাউন্সিলর মোঃ সফিকুল ইসলাম, মোঃ সোহেল রানা, আঃ মালেক শেখ, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তাফাজ্জল হোসেন এসডু পাটওয়ারী, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক অজয় কুমার ভৌমিক, পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাধা গোবিন্দ গোপ, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বাবু, পৌর আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডঃ সাইফুদ্দিন বাবু, সঞ্জিত কুমার পোদ্দার, বাবুল বণিক, জেলা যুবলীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীর বেপারী, জিয়াউল আমিন দীপু, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শেখ আব্দুল মোতালেব, শহর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম রবিনসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও দলীয় নেতা কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। নেতৃবৃন্দ ভাঙ্গনকবলিত শহর রক্ষাবাঁধ পরিদর্শন শেষে হরিসভা মন্দির কমপ্লেক্সের শ্রীশ্রী লোকনাথ মন্দির ও আশ্রম ভবনের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ পরিদর্শনকালে মন্দির ও আশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কার্তিক চন্দ্র সাহা তাদেরকে স্বাগত জানান এবং জরুরিভাবে ভাঙ্গন প্রতিরোধে ব্যবস্থাগ্রহণ না করলে এই বিশাল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যাবে বলে ডাঃ জেআর ওয়াদুদ টিপুকে তা অবহিত করেন।
উল্লেখ্য, গত ৪ এপ্রিল প্রচ- ঝড়ে পুরাণবাজার শহর রক্ষাবাঁধের কয়েকটি স্থানে নতুন করে ভাঙ্গন দেখা দিলে মানুষের মাঝে ভাঙ্গন আতঙ্ক দেখা দেয়। তাৎক্ষণিক প্রশাসনের নেতৃবৃন্দসহ জনপ্রতিনিধিগণ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। বর্তমানে এই ভাঙ্গন প্রতিরোধ ব্যবস্থাগ্রহণে ২৮ হাজার ৫শ’ ৫৬ বস্তা বালুভর্তি জিও টেক্সের ব্যাগ ফেলা হবে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়। তবে ভাঙ্গন প্রতিরোধে স্থায়ীবাঁধ নির্মাণে পুরাণবাজারবাসী গত কয়েক বছর যাবত দাবি জানিয়ে আসছেন।

Loading

শেয়ার করুন: