সবাইকে একসঙ্গে সেই অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে : শিক্ষামন্ত্রী

আনোয়ারুল হক॥

আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে দেশকে অস্থিতিশীল করতে একাত্তর ও পঁচাত্তরের ঘাতকরা পাঁয়তারা চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি। মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে চাঁদপুর সদর উপজেলা অডিটরিয়ামে ‘সম্প্রীতি সমাবেশে’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা সম্প্রীতির বাংলাদেশ চেয়েছি, আমরা অসাম্প্রদায়িক দেশ পেয়েছি। এ জন্যই যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে একটি সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠিত করেছেন। অপশক্তিরা কোনো না কোনো প্রমাণ রেখে যায়, যার মাধ্যমে আমরা অপশক্তির মানুষগুলোকে চিনতে পারি।

তিনি বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার মাধ্যমে আজ বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে দেশ। তখনই একাত্তর ও পঁচাত্তরের ঘাতকরা এই অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দিতে চায়, সরকারের অগ্রযাত্রাকে ক্ষুন্ন করতে চায়। তারা এখনো তৎপর। যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার মৃত, এখন সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায় তারা।

তিনি আরও বলেন, যারা প্রতিদিন কারফিউ দিয়ে দেশ পরিচালনা করেছে, তারা আজ গণতন্ত্রের কথা বলে। অনুপ্রবেশকারীদের ঠেকাতে হবে। তারা দলের মধ্যে ঢুকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে, সেই অপশক্তিকে রুখে দিতে হবে। আজ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। সেসব অপশক্তিকে প্রতিহত করতে হবে। সব ধর্মের মানুষই সম্প্রীতির কথা বলবেন, মানুষের কথা বলবেন। আমাদের পরিচয়, আমরা মানুষ।

দীপু মনি বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের যে প্রতিমা ভাঙ্গচুর হয়েছে, তাদের ঘরবাড়ি পুড়েছে, এ কারণে আমাদের স্বাধীনতাকে আঘাত করা হয়েছে। আমরা যারা বাঙালি, যারা আওয়ামী লীগ করি, যারা নিজেকে মানুষ বলে দাবি করি, আমাদের সবাইকে একসঙ্গে সেই অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। পুলিশ তো একা কিছু করতে পারবে না,নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে হবে সবাইকে।
তিনি বলেন, নিজেকে আগে মানুষ, এরপর বাঙ্গালী ভাবতে শিখতে হবে। ধর্ম হৃদয়ে লালনকারীরা কখনো এটা নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে পারে না। আমাদের মুসলিম ভাইদেরকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিতে দায়িত্ব নিতে হবে।দুষ্কৃতিকারীদের চিহ্নিত করে আইনের হাতে সোপর্দ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, যারা আওয়ামী লীগ করেন বা এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন করছেন। তাদের বুঝতে হবে এই সংগঠনটির আদর্শ কি! এবং এই দলের হয়ে কাজ করতে হলে নিজের মানসিকতা সহনশীল পর্যায়ে রাখতে হবে। এ দেশটা আমাদের সকলের এবং এখানে কোন সাম্প্রদায়িক শক্তির স্থান নেই। এই সম্প্রীতিকে বিশ্বাস রেখে আমরা সবাই দেশের জয়যাত্রাকে এগিয়ে নিবো এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা সাম্প্রদায়িক শক্তিকে প্রতিরোধ করব।

জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ওসমান গনি পাটওয়ারী, সাবেক মুক্তিযুদ্ধা কমান্ডার এম এ ওয়াদুদ, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডা. জেআর ওয়াদুদ টিপু, চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র অ্যাডভোকেট জিল্লুর রহমান জুয়েল, চাঁদপুর সদর উপজেলার পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাস নাজিম দেওয়ান,ফরিদগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের পাটওয়ারী, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান এক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রণজিৎ রায় চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের কৃষিবিষয়ক সম্পাদক অজয় কুমার ভৌমিক, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সুভাষ চন্দ্র রায়, তরপুরচন্ডী কাজি বাড়ি জামে মসজিদের খতিম মাওলানা মেহেদী হাসান রুহানী, চান্দ্রাবাজার জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আলআমিন, খ্রিস্টান ধর্মের মনিদ্র বর্মন।

Loading

শেয়ার করুন: