হাজীগঞ্জের ফাতেমার আত্মহত্যার পেছনে অন্য রহস্য!

নিছক আত্মহত্যা নয়, প্রেমে প্রতারিত হয়েই চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে মাদ্রাসা পড়ুয়া কিশোরী ফাতেমা আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছে। পাড়া প্রতিবেশী সবাই জানতো কিশোরী ফাতেমা মায়ের কষ্ট দেখে আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু তার মৃ্ত্যুর দুই দিন পর সেই ধারণা পাল্টে দিয়েছে একটি চিরকুট (সুসাইডল নোট)। মায়ের উদ্দেশ্যে চিরকুটটি লেখা হলেও তাতে রাজু নামে এক যুবককে তার মৃত্যুর জন্য দায়ী করেছে ফাতেমা।

গত সোমবার (১২ এপ্রিল) রাতে হাজীগঞ্জের হাটিলা ইউনিয়নের গঙ্গানগর গ্রামের মৃত জাকির হোসেনের মেয়ে ফাতেমা বেগমের (১৫) গলায় ওড়না পেঁচানো লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার দিন বাড়ির অন্যদের ফাঁকি দিয়ে ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে ফাতেমা। তখন সবার ধারণা ছিল, মা ছালেহা বেগমের অভাবের সংসারে মেয়ে ফাতেমা কষ্ট নিয়ে আত্মহত্যা করেছে।

ঘটনার পর হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ মৃতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। পরে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। কিন্তু এই ঘটনার দুই দিন পর বুধবার দুপুরে ফাতেমার বড়ভাই মো. ফয়সাল একটি চিরকুট উদ্ধার করে। ফাতেমার বইয়ের পাশে একটি নোটবুক খুঁজতে গিয়ে এই চিরকুটের সন্ধান মেলে।

তাতে মায়ের উদ্দেশ্যে ফাতেমা লিখেছে, মা আপনি আমাকে ক্ষমা করবেন। আমাদেরকে নিয়ে অনেক কষ্ট করেছেন। আমি চলে গেলাম। তবে রাজুকে আমি ক্ষমা করবো না। কারণ, সে আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে।

ফাতেমার ভাই মো. ফয়সাল বলেন, তার বোনের সঙ্গে মুঠোফোনে পরিচয় হয় আনিছুর রহমান রাজু নামে এক যুবককে। পাশের শাহরাস্তি উপজেলার বাততলা গ্রামে রাজুর বাড়ি। ফয়সালের ধারণা, রাজু তার বোনের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। এতে বাধ্য হয়ে আত্মহত্যার পথ বেচে নিয়েছে ফাতেমা।

ফয়সাল আরো বলেন, তার বাবার মৃত্যুর পর মা ছালেহা বেগম সংসারের হাল ধরেন। তার বোন এলাকার একটি মাদ্রাসায় দশম শ্রেণিতে পড়তো।

এদিকে, ঘটনা সম্পর্কে হাজীগঞ্জ থানার ওসি হারুনুর রশিদ বলেন, পুলিশ পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। তদন্ত করে যদি আত্মহত্যার প্ররোচিত করার অভিযোগ নিশ্চিত হওয়া যায়, তাহলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অন্যদিকে, অভিযুক্ত রাজু ঘটনার পর থেকে এলাকা ছেড়ে গা ঢাকা দিয়েছে।

Loading

শেয়ার করুন: