উদ্বৃত্ত রেখেই হাজীগঞ্জ পৌরসভার ৬২ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। অতিমারি করোনা কারনে কোনো ধরনের অনুষ্ঠান ছাড়াই ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের বাজেট ঘোষণা করেন পৌর মেয়র আ. স. ম. মাহবুব উল আলম লিপন। গত ৩০ জুন এ বাজেট ঘোষণা করা হয়। ঘোষিত বাজেটে নতুন করে কর আরোপ করা হয়নি।
উক্ত বাজেটে মোট আয় ধরা হয়েছে ৬১ কোটি ৮৭ লাখ ৬১ হাজার টাকা এবং মোট ব্যয় ৫৮ কোটি ৭৭ লাখ ৪৭ হাজার টাকা। বাজেটে উদ্বৃত্ত রাখা হয়েছে ৩ কোটি ১০ লাখ ১৪ হাজার টাকা। যা গত অর্থ বছরের (২০২০-২০২১) চেয়ে ১ কোটি ৮৭ লাখ ৬ হাজার ২৫০ টাকা বেশি।
পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের বাজেটে সর্বমোট আয় ধরা হয়েছে ৬১ কোটি ৮৭ লাখ ৬১ হাজার টাকা। মোট ব্যয় ৫৮ কোটি ৭৭ লাখ ৪৭ হাজার টাকা। সর্বমোট উদ্বৃত্ত রাখা হয়েছে ৩ কোটি ১০ লাখ ১৪ হাজার টাকা ।
বাজেটে সর্বমোট আয়ের মধ্যে নিজস্ব (রাজস্ব) খাত আয় ধরা হয়েছে ২৫ কোটি ২৫ লাখ ৪১ হাজার ২৫০ টাকা। এর মধ্যে নিজস্ব রাজস্ব আয় ২০ কোটি ৩৬ লাখ ৫৬ হাজার ২৫০ টাকা এবং পানির রাজস্ব আয় ৪ কোটি ৮৮ লাখ ৮৫ হাজার টাকা।
রাজস্ব খাতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২৪ কোটি ৪৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা। এর মধ্যে নিজস্ব রাজস্ব ব্যয় ১৯ কোটি ৯৬ লাখ ৭০ হাজার টাকা এবং পানির রাজস্ব ব্যয় ৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। রাজস্ব আয়ে মোট উদ্বৃত্ত থাকবে ৮১ লাখ ৭১ হাজার ২৫০ টাকা।
অপর দিকে উন্নয়ন খাতে মোট আয় ধরা হয়েছে ৩৬ কোটি ৬২ লাখ ১৯ হাজার ৭৫০ টাকা। তার মধ্যে উন্নয়ন খাতে মোট ব্যয় হবে ৩৪ কোটি ৩৩ লাখ ৭৭ হাজার টাকা। উদ্বৃত্ত থাকবে ২ কোটি ২৮ লাখ ৪২ হাজার ৭৫০ টাকা। রাজস্ব ও উন্নয়ন খাতে সর্বমোট উদ্বৃত্ত থাকবে ৩ কোটি ১০ লাখ ১৪ হাজার টাকা
রাজস্ব আয়ের মূল খাত, পৌর কর, ব্যবসা/ট্রেড লাইসেন্স ফি, সম্পত্তি হস্তান্তর কর, পৌর হাট-বাজার ইজারা, বাস-ট্রাক-সিএনজি স্ট্যান্ড ইজারা, বালুর ঘাট ইজারা, রোলার ভাড়া, দোকান বরাদ্দের সেলামাী (অগ্রিম) ও ঘরভাড়াসহ প্রভৃতি।
রাজস্ব ব্যয়ের মূল খাত, সম্মানী ভাতা ও বেতনভাতা, করোনা প্রতিরোধে সচেনতাবৃদ্ধি মূলক প্রচার ও উদ্বুদ্ধকরণ, বিস্তার রোধ, আক্রান্তদের সহায়তা, কর্মহীন সকল শ্রেণির মানুষদের সহায়তা, সুরক্ষা ও চিকিৎসা সামগ্রী প্রদান, রাজস্ব খাতে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প কাজ, বিদ্যুৎ খাতের বিভিন্ন মালামাল ক্রয়, পানির লাইন সম্প্রসারণ ও সৌন্দর্য বর্ধণ ফোয়ারা নির্মাণ ইত্যাদি।
অপর দিকে উন্নয়ন খাতে প্রধান আয়ের খাতগুলো হচ্ছে, সরকার কর্তৃক উন্নয়ন সহায়তা মঞ্জুরী, অতিরিক্ত বরাদ্দ, থোক বরাদ্দ, বিশেষ বরাদ্দ, ইউ.জি.আই, আই,পি-৪ প্রকল্পে অর্ন্তভূক্তি (সম্ভাব্য), বি.এম.ডি.এফ (এমজিএসপি) গুরুত্বপূর্ণ নগর অবকাঠামো ও জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড ইত্যাদি।
উন্নয়ন ব্যয়ের প্রধান খাতগুলো হচ্ছে, রাস্তা-ঘাট নির্মাণ, মেরামত ও উন্নয়ন, ব্রীজ-কালর্ভাট-ড্রেন নির্মাণ, মেরামত, গণশৌচাগার নির্মাণ ও মেরামত, হাট-বাজার উন্নয়ন, সুপার মার্কেট ও হকার্স মার্কেট উন্নয়ন, মেরামত ও উন্নয়ন ইত্যাদি।
করোনাকালীন বাজেটের বিষয়ে পৌরসভার মেয়র আ.স.ম মাহবুব-উল আলম লিপন চাঁদপুর কন্ঠকে জানান, করোনার অতিমারি আমাদের পৌর উন্নয়নকে দাবিয়ে রাখতে পারবে না। আমাদের যেখানে যখন উন্নয়নের প্রয়োজন সেখানে সেই উন্নয়ন করা হবে। বিশাল পরিসরে আমাদের বাজেট ঘোষনা করার পরিকল্পনা ছিলো কিন্তু করোনার অতি ঝুঁকির কারনে আমরা অনুষ্ঠান ছাড়াই বাজেট ঘোষনা করেছি।
তিনি আরো বলেণ, করোনার মতো দূর্যোগের মধ্যে ঘোষিত বাজেটে আমরা পৌর নাগরিকদেও কথা মাখায় রেখে নতুন কওে কোন কর আরোপ করা হয়নি। পৌরসভার যুগোপযোগী বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে উন্নত নাগরিক সেবা প্রদানের জন্য আমি এবং আমার পৌর পরিষদ আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি। ভবিষ্যতেও এই চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার সামগ্রী (চাল ও নগদ টাকা) বিতরণের পাশাপাশি, পৌরসভার পক্ষ থেকে করোনা প্রতিরোধে সচেনতামূলক প্রচার, কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত ও কর্মহীন সকল শ্রেণির মানুষদের সহায়তা, সুরক্ষা ও চিকিৎসা সামগ্রী প্রদান করে আসছি। এ ছাড়াও এবারের বাজেটে করোনা মোকাবেলায় এবং ডেঙ্গু প্রতিরোধে বিশেষ বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
