আজ বিশ্ব শরণার্থী দিবস : বাংলাদেশের কাঁধে ১১ লাখ রোহিঙ্গা

২০ জুন, বিশ্ব শরণার্থী দিবস। মিয়ানমার থেকে চার দফায় ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা এসে শরণার্থী হিসেবে বাংলাদেশে অবস্থান করছে। ফলে দেশে রোহিঙ্গারা বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের পাহাড়ের চূড়ায় এসব রোহিঙ্গাদের অবস্থান। তাদের শিবিরগুলো অরক্ষিত থাকায় তারা সর্বত্র বিচরণ করে বেড়াচ্ছে। রোহিঙ্গাদের নিয়ন্ত্রণে কঠোর ব্যবস্থাসহ আশ্রিত রোহিঙ্গাদের নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তরের দাবি তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পাশাপাশি দ্রুত মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া চালু করারও দাবি জানান তারা।

২০ জুন, বিশ্ব শরণার্থী দিবস। মিয়ানমার থেকে চার দফায় ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা এসে শরণার্থী হিসেবে বাংলাদেশে অবস্থান করছে। ফলে দেশে রোহিঙ্গারা বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের পাহাড়ের চূড়ায় এসব রোহিঙ্গাদের অবস্থান। তাদের শিবিরগুলো অরক্ষিত থাকায় তারা সর্বত্র বিচরণ করে বেড়াচ্ছে। রোহিঙ্গাদের নিয়ন্ত্রণে কঠোর ব্যবস্থাসহ আশ্রিত রোহিঙ্গাদের নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তরের দাবি তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পাশাপাশি দ্রুত মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া চালু করারও দাবি জানান তারা।

বাড়ছে অপরাধ
পুলিশের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, দুই বছরে রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে হত্যাসহ ২৩০টির মতো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড হয়েছে। তার মধ্যে ২৫টির মত খুন হয়েছে। এসব ঘটনায় দু’শ’ রোহিঙ্গাকে আসামি করা হয়। এর মধ্যে অস্ত্র আইনে ২৫টি মামলায় ৫৫ জন, মাদক আইনে ১০০ মামলায় ১৫০ জন, পাসপোর্ট আইনের ৬৫ মামলায় ৫০ জন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের দুই মামলায় দু’জন, অপহরণের পাঁচ ঘটনায় ১০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া চোরাচালান আইনের সাত মামলায় ১৫ জন, চুরির কয়েকটি মামলায় ১০ জন এবং ডাকাতির আট মামলায় ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়াও, গত দেড় বছরে রোহিঙ্গা শিবির থেকে পালিয়ে সাগরপথে মালয়েশিয়া পাড়িসহ বিভিন্ন স্থান থেকে প্রায় ৫৬ হাজার রোহিঙ্গাকে আটক করে ক্যাম্পে ফেরত আনা হয়।

স্থানীয়দের আশঙ্কা
উখিয়া ও টেকনাফের সর্বত্র শরণার্থী শিবির। দুই উপজেলার জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ। অথচ মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে ১১ লাখেরও বেশি। যা স্থানীয়দের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি। এছাড়া দিন যতই গড়াচ্ছে, রোহিঙ্গা শিবিরে বাড়ছে অস্থিরতা। একই সঙ্গে বাড়ছে হত্যা, গুম, অপহরণসহ নানা অপরাধ। রোহিঙ্গাদের কাছে স্থানীয়রাই এখন চাপে আছে। প্রতিদিন রোহিঙ্গাদের কারণে কোনো না কোনো সমস্যায় পড়ছে স্থানীয়রা। এভাবে চলতে থাকলে এক সময় বড় ধরনের ঘটনার আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্টরা।

আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস (এআরএসপিএইচ) মুহিব উল্লাহ বার্তা২৪.কমকে বলেন, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে থাকবে এটা কিন্তু আমরা চাই না। বাংলাদেশ আমাদের বাড়ি নয়। চিরদিন বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শিবিরে থাকতে চাই না। আমরা নিজ দেশে ফিরতে চাই। প্রায় দুই বছরে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ওআইসিসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদল, গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী-এমপিরা রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন। কিন্তু তাতে খুব একটা সুফল আসেনি।

টেকনাফ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল আলম বার্তা২৪.কমকে বলেন, মিয়ানমারের মিথ্যাচারের কারণে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বন্ধ রয়েছে। বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গারা এখন বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে যাচ্ছে। তবে এসব সঙ্কট নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে সরকার।

কক্সবাজার শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ আবুল কালাম বলেন, বর্তমানে নতুন ও পুরাতন সব মিলিয়ে উখিয়া-টেকনাফ দু’টি উপজেলায় ১০ লাখের মত রোহিঙ্গা রয়েছে। বিশ্ব শরণার্থী দিবস উপলক্ষে কয়েকটি রোহিঙ্গা শিবিরে তা পালনের আয়োজন করা হয়েছে। শিবিরগুলোতে র‌্যালি, আলোচনা, খেলাধুলা ও রোহিঙ্গাদের জীবনীর ওপর চিত্র প্রদর্শন করা হবে।

Loading

শেয়ার করুন: